উত্তরকাশী: দীপাবলির দিন থেকে উত্তরকাশীর সিলকারা টানেলে আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা। প্রথমে জানা গিয়েছিল সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে পড়েছেন ৪০ জন শ্রমিক। এখন জানা যাচ্ছেস সেই সংখ্যাটি ৪১ জন। তাদের সবাইকে নিরাপদে বের করে আনার জন্য টানা সপ্তম দিনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই উদ্ধার অভিযান দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। কখনো পাহাড় ফাটছে, আবার কখনো ভেঙে পড়ছে উদ্ধারের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্র।
শ্রমিকদের বাইরে বের করে আনতে চলমান উদ্ধার অভিযান নিত্যদিন একের পর এক চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। শুক্রবার, একটি সুড়ঙ্গ নির্মাণের জন্য পাইপ বিছানোর সময়, হঠাৎ সুড়ঙ্গের ভিতরে পাহাড় ফাটলের বিকট শব্দ শোনা যায়। এতে উদ্ধারকারী দলের সদস্য ও অন্য লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে সুড়ঙ্গে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উদ্ধারকারীদের ধারণা, সুড়ঙ্গের ভিতরে আরও একটি ধস নেমেছে। উদ্ধারকাজ চালিয়ে নিয়ে গেলে আরও ধস নামতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের কী ভাবে উদ্ধার করা হবে, তা ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও।
গভীর রাতে উত্তরকাশী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক রুহেলা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, এনএইচআইডিসিএল কর্মকর্তারা সুড়ঙ্গের ভিতরে একটি পাহাড় ফাটলের শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে উপস্থিত নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশকর্মী ও উদ্ধারকাজে যুক্ত দল বিকট শব্দ শুনতে পাওয়ার কথা জানায়।
বলে রাখা ভালো, এর আগে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছি, শ্রমিকদের উদ্ধার করতে ৬০ মিটার পর্যন্ত গর্ত তৈরি করতে হবে। এর পর সেই গর্তে ৮০০ এবং ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের একটি পাইপ ঢুকিয়ে তার মধ্যে দিয়ে বার করে আনা হবে শ্রমিকদের। তবে পাহাড়ে ফাটলের শব্দ শোনার পর থেকে সেই কাজ বন্ধ রয়েছে।
আপাতত, এই ঘটনার পর কীভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বৈঠক চলছে। একই সঙ্গে ন্যাশনাল হাইওয়েজ় অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল)-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর বলেন, এ ধরনের ঘটনায় ফাটল দেখা দেয়। টানেল নির্মাণের সময় এমন পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে। অতীতের ঘটনা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, এতে টানেলের বড়ো ধরনের ক্ষতি হতে পারে। বর্তমানে টানেলে পাইপ বসানোর কাজ বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতেই শীর্ষ আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞদের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৭০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে ৪০, ভূমিধসে ব্যাহত উদ্ধারকাজ