কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে আর্সেনিক দূষণ ক্রমশ বিপজ্জনক রূপ নিচ্ছে। জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালে (এনজিটি) কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পেশ করা একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভূগর্ভস্থ জল থেকে সেচের মাধ্যমে আর্সেনিক কৃষিজমির মাটিতে প্রবেশ করছে। এর ফলে শস্যের মাধ্যমে এই বিষ খাদ্যশৃঙ্খলেও পৌঁছে যাচ্ছে।
পরিবেশ আদালতের চেয়ারম্যান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং সদস্য এ সেনথিল ভেলের নেতৃত্বে এনজিটিতে একটি মামলার শুনানির সময় এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। ধানের মাধ্যমে আর্সেনিক দূষণের প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধান চাষে বেশি জল প্রয়োজন হওয়ায় ধানগাছ সহজেই জল ও মাটি থেকে আর্সেনিক শোষণ করে।
ভূগর্ভস্থ জলের দূষণের প্রভাব
কেন্দ্রের মতে, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে আর্সেনিক দূষণ ব্যাপক মাত্রায় ঘটছে। দূষিত জল ব্যবহারে শাক-সবজি এবং ধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যেও আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। তুলনামূলকভাবে, বেগুন, টম্যাটো বা বিনসের মতো সব্জিতে এই দূষণের প্রভাব কম হলেও শাক এবং মাটির নীচের অংশ খাওয়ার সব্জিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি।
নবান্নের প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই আর্সেনিক মুক্ত জলের জন্য নানাবিধ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। জলজীবন মিশনের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলের পরিবর্তে সারফেস ওয়াটারের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দূষণ রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
১. আর্সেনিক প্রতিরোধী ধানের চাষ বৃদ্ধি।
২. কম জল শোষণকারী সব্জির চাষ।
৩. দূষিত জলে বিশেষ চারকোল, সবুজ সার এবং সিলিকেট সার ব্যবহার।
৪. দূষিত জল পুকুরে ধরে রেখে বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশিয়ে তার মাত্রা কমানো।
কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, আর্সেনিক দূষণ সবচেয়ে বেশি এমন এলাকাগুলিতে খাওয়ার জন্য নয়, এমন গাছ বা ডালজাতীয় শস্যের চাষ করা উচিত।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দূষণের মাত্রা এতটাই গুরুতর যে, আর্সেনিকযুক্ত চাল দূষণহীন এলাকাতেও পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে সেখানকার বাসিন্দারাও এই দূষণের শিকার হচ্ছেন।
সরকারি উদ্যোগ এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বাস্তবায়িত হলে আর্সেনিক দূষণের প্রভাব কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কলকাতা বিমানবন্দরে ১০টাকায় মিলবে চা, সৌজন্যে আপ সাংসদ