পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান ভোটার তালিকা এবং ২০০২ সালের তালিকার বুথভিত্তিক তুলনায় মাত্র ৫৫ শতাংশ মিল পাওয়া গেছে। এই পরিসংখ্যান ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা—আগামী বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)-এর সময় প্রায় ১ কোটি ভোটারের নাম বাদ পড়তে পারে।
আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই এসআইআরে ২০০২ সালের তালিকায় নাম থাকা ভোটার বা তাঁদের পিতামাতার নাম পাওয়া গেলে তাঁদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৈধ বলে গণ্য করা হবে। বাকিদের পরিচয়, ঠিকানা ও নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ১১ ধরনের নথি জমা দিয়ে।
বিপদের মুখে প্রায় ৪৫ শতাংশ ভোটার
কমিশনের তুলনামূলক তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৪৫ শতাংশ বর্তমান ভোটারের নাম বা তাঁদের পরিবারের নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই। এর মধ্যে কিছু অংশ ২০০২ সালের পর রাজ্যের মধ্যেই ঠিকানা বদল করেছেন, আবার কেউ কেউ অন্য রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন।
একজন কমিশন আধিকারিকের কথায়, “এই দুই শ্রেণির ভোটারদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত নিজেদের ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে যোগসূত্র প্রমাণ করতে পারবেন। তবে এর বাইরেও প্রায় ২৫ শতাংশ ভোটার — প্রায় ২ কোটি মানুষ — রয়েছেন, যাঁদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।”
সম্ভাব্য হিসাব
একজন সিনিয়র আধিকারিকের কথায়, “ধরা যাক, এই ২ কোটি ভোটারের অর্ধেক প্রয়োজনীয় নথি দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে প্রায় ১ কোটি নাম এসআইআরের পর বাদ পড়তে পারে।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বিজেপির দাবি, রাজ্যে প্রায় ১ থেকে ১.৫ কোটি ভুয়ো ভোটার রয়েছেন, যাঁরা নাকি ভুয়ো নথির সাহায্যে ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, সিপিএমের দাবি, তাঁদের করা একটি যাদবপুরের নমুনা সমীক্ষা অনুযায়ী এই সংখ্যা প্রায় ১ কোটি।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই তথ্য প্রকাশের পর এসআইআরের প্রক্রিয়া ঘিরে আরও রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হবে।
কমিশনের অগ্রগতি
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, “দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি ছাড়া রাজ্যের সব জেলায় বুথভিত্তিক তুলনামূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যজুড়ে গড়ে ৫৪ থেকে ৫৫ শতাংশ ভোটারের নাম ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে মেলে।”
যাঁদের নাম ২০০২ ও ২০২৫— উভয় তালিকাতেই রয়েছে, তাঁদের কোনও নথি জমা দিতে হবে না। যদি তাঁদের সন্তানরা ২০০২ সালের তালিকায় না থাকেন, কিন্তু বর্তমান তালিকায় নাম থাকে, তবে শুধুমাত্র পিতামাতার সঙ্গে সম্পর্ক প্রমাণকারী পরিচয়পত্র জমা দিলেই চলবে।যাঁরা ২০০২ সালের পর অন্য বুথ বা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত হয়েছেন, তাঁরা নিজেদের পূর্ববর্তী পার্ট নম্বর ও বুথ নম্বর উল্লেখ করে সেই যোগসূত্র প্রমাণ করতে পারবেন।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us