রাজনীতিতে সমস্ত ক্ষেত্রের মানুষের অবাধ বিচরণ। এমনকী রাজনীতিতে প্রবেশ করার পরে আইনজীবী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, অভিনেতা, ক্রীড়াবিদদের পেশাগত পরিচয়ও কখনও কখনও উহ্য হয়ে যায়। তবে ডা. বিধানচন্দ্র রায় (Dr. Bidhan Chandra Roy) এমনই এক ব্যক্তিত্ব, যিনি একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং প্রথমসারির রাজনীতিবিদ—উভয় পরিচয়েই সমান ভাবে পরিচিত। এ ক্ষেত্রে তিনি রাজনীতির জগতে ব্যতিক্রমী তো বটেই!
একজন কিংবদন্তি চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ডা. বিধানচন্দ্র রায়। মহাত্মা গান্ধীরও চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। মহাত্মা গান্ধী একটি প্রশ্ন করেছিলেন ডা. বিসি রায়কে: “কেন আমি তোমার চিকিৎসা নেব? তুমি কি আমার চার কোটি দেশবাসীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে পারো”?
বিসি রায় জবাব দিয়েছিলেন, “না গান্ধীজী, আমি সব রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে পারিনি। কিন্তু এখানে আমি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর চিকিৎসা করতে আসিনি বরং তাঁর চিকিৎসা করতে এসেছি যিনি আমার কাছে আমার দেশের ৪০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী”।
অন্য দিকে, তিনি একজন বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা, একজন শিক্ষাবিদ এবং একজন সমাজসেবী। জাতীয় কংগ্রেসের একজন গুরুত্বপূর্ণ গান্ধীবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯২৫ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ডা. বিসি রায়। পড়ুয়াদের ধর্মঘট ও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ধারণার বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন একটি শক্তিশালী পেশাদার জ্ঞান জাতি গঠনে আরও বেশি অবদান রাখতে পারে। ১৯২৬ সালে নিজের প্রথম রাজনৈতিক ভাষণ দেন বিধানচন্দ্র। ১৯২৮ সালে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ডা. বিধানচন্দ্র রায়: বহুবিধ প্রতিভার সমাহার
দেশভাগের জেরে পশ্চিমবঙ্গকে একটি ‘সমস্যাপূর্ণ রাজ্য’ থেকে সমৃদ্ধশালী রাজ্যে রূপান্তরিত করেছিলেন তিনি। তাঁর সময়ে নতুন করে গড়ে উঠতে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ। সেই কৃতিত্বের রেশ ধরেই তাঁক বলা হয় ‘বাংলার রূপকার’। ১৯৪৮ সালে গ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। তাঁর ১৪ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হয়েছিল।
১ জুলাই দিনটিকে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয় ভারতে। ১৯৯১ সালে প্রথম বার এই দিনটি পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়েই এই তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ভারতে কবে থেকে পালিত হয় জাতীয় চিকিৎসক দিবস, জানুন এই দিনটির ইতিহাস ও গুরুত্ব