কলকাতা: প্রাথমিকে ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিলের ঘোষণা কলকাতা হাইকোর্টের। তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিকে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
বিচারপতির রায়, চাকরি বাতিল হলেও আগামী চার মাস তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতন পাবেন প্যারা টিচার হিসাবে। হাই কোর্টের রায়, রাজ্যকে আগামী তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ করতে হবে। বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন।
২০১৪ সালে যে টেট পরীক্ষা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রাথমিকে সাড়ে ৪২ হাজার পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। যার মধ্যে ৩৬ হাজার জনই ছিলেন সেই মুহূর্তে অপ্রশিক্ষিত শিক্ষক। ২০১৬-য় নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি, এই অভিযোগে মামলা করেছিলেন ১৪০ জন পরীক্ষার্থী। নিয়োগের প্রাক্কালে কোনো অ্যাপটিটিউড টেস্ট না নেওয়া, সংরক্ষণ নীতি না মানার মতো অভিযোগও উঠেছিল। সেই নিয়ে দীর্ঘ শুনানির পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রায়ে একসঙ্গে ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করারই নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও প্রশিক্ষিতদের চাকরি থাকছে।
এ দিকে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করার কথা ভাবছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানালেন, তাঁরা ওই রায় হাতে পাননি। তবে এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন। গৌতমের কথায়, ‘‘৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হলে বিরাট বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। বোর্ড আইনি পরামর্শ নিচ্ছে। আমরা এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করতে যাচ্ছি।’’
পর্ষদ সভাপতির দাবি, বোর্ড প্রত্যেককে ওডিএল মোডে প্রশিক্ষিত করিয়েছে। ২০১৯ সালের মধ্যে তা সম্পূর্ণ হয়েছে। এনসিটিই নিয়ম মেনেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট দাবি, “এখন আর কেউ অপ্রশিক্ষিত নেই। আমি নির্দ্বিধায় বলছি, পর্ষদ সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবে। বোর্ড যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে।” তবে এ ব্যাপারে হাইকোর্টের অর্ডার হাতে পেলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে পর্ষদ।
আরও পড়ুন: ভালো-মন্দের সিদ্ধান্ত নেবে মানুষ, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে রাজ্য সরকারকে তিরস্কার সুপ্রিম কোর্টের