কলকাতা: এখন থেকে থানা নয়, রাজনৈতিক দলগুলির সভা, মিছিলের অনুমতির জন্য পুলিশ সুপার বা কমিশনারেটদের কাছে আবেদন করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। শুক্রবার মিছিল-মিটিংয়ের অনুমতির জন্য নয়া বিধি তৈরি করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
মিছিল বা সভার অনুমতি দিয়ে রাজ্য তথা পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। ভাঙড়ে সিপিএমের একটি মিছিল সংক্রান্ত মামলায় গোটা রাজ্যের জন্য নয়া বিধি তৈরি করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, এ বার সভা, মিছিলের জন্য থানায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে সরাসরি পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করা যাবে। কোন দল কখন কর্মসূচির জন্য আবেদন জানাল তা আলাদা ভাবে রেজিস্ট্রার করে রাখতে হবে পুলিশ সুপারকে। আবেদনের পরিস্থিতি (স্ট্যাটাস) অনলাইনে দেখার ব্যবস্থা করতে হবে। যে আগে আবেদন করবে, তার বিষয়টি আগে বিবেচনা করা হবে। এখানে কোনও বৈষম্য যেন না থাকে।
ভাঙড়ের ওই মিছিল সংক্রান্ত মামলায় আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আদালতকে প্রস্তাব দেন, অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য করা যাবে না। কোন দল, কখন আবেদন জমা দিল, তার লিখে রাখার জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার রাখতে হবে। ক্রমিক সংখ্যা ধরে সেইসব আবেদন বিবেচনা করে অনুমতি দিতে হবে পুলিশকে। কতজন মিছিলে যোগ দিতে পারে তার সংখ্যা, কোথায় মিছিল করতে চায়, সেই জায়গা বা মিছিলের রুট জানতে হবে পুলিশকে। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে আদালত।
এক নজরে গাইডলাইন
থানায় নয়, মিছিল বা সভার অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে এসপি বা সিপি-র কাছে।
অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য নয়, নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে।
সভা বা মিছিলের আবেদনের জন্য আলাদা করে রেজিস্ট্রার করতে হবে।
কোন দল কখন আবেদন করল, তা নথিবদ্ধ করতে হবে রেজিস্ট্রারে।
ক্রমিক সংখ্যা ধরে সেই আবেদন বিবেচনা করে অনুমতি দেবে পুলিশ।
কর্মসূচির স্থান, জমায়েতের সংখ্যা, মিছিলের রুট সম্পর্কে জানাতে হবে পুলিশকে।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যাতে কর্মসূচি হয় তা নিশ্চিত করবে পুলিশ।
আবেদনপত্রের স্ট্যাটাস যাতে অনলাইনে দেখা যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সভা-মিছিলে রাজ্য পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না বলে বিরোধীরা বারবার অভিযোগ তুলে থাকেন। বিজেপি থেকে শুরু করে সিপিএম এ নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ তুলেছে। তবে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে ভাঙড়ে সিপিএমের সভাকে কেন্দ্র করে। সিপিএমের অভিযোগ ছিল, সেখানে মিছিলের অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ। এরপর সিপিএমের পক্ষ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে অনুমতি চেয়ে মামলা দায়ের করা হয়।