কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সলমন-সোনাক্ষীদের সঙ্গে নাচের তালে পা মেলাতে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর তা নিয়েই খোঁচা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের মন্তব্যে বৃহস্পতিবার উত্তাল হয়ে উঠল রাজ্য বিধানসভা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘নারী বিদ্বেষী’ বলে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা-মন্ত্রীসভার অন্যতম প্রধান মহিলা মুখ শশী পাঁজা। তৃণমূলের দাবি, বিজেপিকে ক্ষমা চাইতে হবে। পালটা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করাও। এর পর ওয়াক আউট করেন তাঁরা।
অধিবেশনের শুরুতেই মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ কথা বলেছেন। আমরা প্রতিবাদ করতে চাইছি। তিনি নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন। আমরা তাঁকে ধিক্কার জানাই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা লজ্জার। বিজেপি যে নারী বিদ্বেষী তার প্রমাণ আমরা একাধিকবার পেয়েছি। ভোট প্রচারেও যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী দিদি, দিদি বলেছেন। যদি গিরিরাজ সিং মন্তব্যের প্রতিবাদে বিজেপির কেউ কিছু না বলে তাহলে বুঝতে হবে যে এই ঘটনা তারা সমর্থন করছে।”
তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা সবাই নিজের আসন ছেড়ে ওয়েল নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পাল্টা বিজেপি শিবিরও হট্টগোল করতে থাকে। এরই মধ্যে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা বাঞ্ছনীয় নয়।” বেশ কিছুক্ষণ শোরগোল চলার পর বিধানসভা কক্ষ থেকে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের সম্মানে কয়েকবার নাচের ছন্দে পা মেলান মুখ্যমন্ত্রী। সেই ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে দিল্লিতে গিরিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, “গোটা বাংলা দুর্নীতিতে জর্জরিত। গরিব মানুষ তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ মুখ্যমন্ত্রী সলমনের সঙ্গে নাচছেন! এটা তাঁর শোভা পায় না।” গিরিরাজের বক্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
অন্য় দিকে, গিরিরাজের অপ্রীতিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে এ দিন কলকাতার হাজরা মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস। ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশী পাঁজা। শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান তোলাই নয়, গিরিরাজকে ধিক্কার জানাতে আদিবাসী গানের সুরে গান গেয়ে নাচলেন তৃণমূলের নেত্রীরা। গিরিরাজ ক্ষমা না চাইলে, তৃণমূলের প্রতিবাদ আন্দোলন যে আরও তীব্র হবে তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন চন্দ্রিমারা। তিনি বলেন, “এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা এক জন নারী সম্পর্কে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, সেটা দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না।’’
আরও পড়ুন: শপথ নিয়ে প্রথম প্রতিশ্রুতি রাখলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি