ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে রাজ্য প্রশাসন ও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চলা টানাপোড়েনের মাঝেই রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দিল্লিতে তলব করল কমিশন। বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে তাঁকে নির্বাচন সদনে সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালের বিমানেই দিল্লি রওনা হচ্ছেন মুখ্যসচিব।
ঘটনার সূত্রপাত সম্প্রতি কমিশনের পাঠানো চিঠি থেকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের চার সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কমিশন তাঁদের সাসপেন্ড করার পাশাপাশি এফআইআর দায়ের ও বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন ‘নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক’ (ইআরও) ও দু’জন ‘সহকারী নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক’ (এইআরও)। পাশাপাশি, বারুইপুর পূর্বের এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধেও এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রথমে ৫ অগস্ট এবং পরে ৮ অগস্ট কমিশন রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চায়। সোমবার রাজ্য সরকার কমিশনকে জবাব দিয়ে জানায়, আপাতত পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না কেন্দ্রের এইআরও সুদীপ্ত দাস ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিৎ হালদারকে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। তবে বাকিদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
চিঠিতে মুখ্যসচিব যুক্তি দেন, সরকারি আধিকারিকদের বহু দায়িত্ব পালন করতে হয় এবং নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের জন্য প্রায়শই অধস্তন কর্মীদের উপর দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। তাই বিস্তারিত অনুসন্ধান ছাড়াই কঠোর পদক্ষেপ নিলে তা শুধু সংশ্লিষ্টদের নয়, সামগ্রিকভাবে সরকারি কর্মীদের মনোবল ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
কমিশনের তলবের পেছনে এই মতভেদের প্রেক্ষাপটকেই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এখন নজর থাকবে, মুখ্যসচিব ও কমিশনের বৈঠকের পর পরিস্থিতি কোন পথে এগোয়।
খবর অনলাইনে পড়ুন রাজ্য-দেশ-বিদেশের নানা খবর