কলকাতা: ‘যে কোনো সময় জোশীমঠের মতো অবস্থা হতে পারে রানিগঞ্জেরও’। মঙ্গলবার দুপুরে মেঘালয় রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই আশঙ্কার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ধারণা, এমন হলে অন্তত ৩০ হাজার বাসিন্দা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনি।
বিমানবন্দরে জোশীমঠ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে রানিগঞ্জ নিয়ে এই আশঙ্কার কথা শুনিয়ে মমতা বলেন, ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি জোশীমঠে। আগে বন্দোবস্ত করলে এই দিন দেখতে হত না। একই অবস্থা রানিগঞ্জে। গত ১০ বছর ধরে এটা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আমরা লড়াই করছি। যে টাকা দেওয়ার কথা ছিল, কিছুই দেয়নি’।
তিনি আরও জানান, ‘পরিত্যক্ত খনিগুলির দিকে নজর দেওয়া এবং ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু কেন্দ্র কর্ণপাত করে না। আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে যতটা সম্ভব এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। বিপদ আসলে একসঙ্গে ২০–৩০ হাজার মানুষ তাতে পড়বে।’
অধিকাংশ সময় কয়লা তুলে নেওয়ার পর খনিগুলি ভরাট না করেই ফেলে রাখা হয়। তার জেরে প্রায় সময়ই রানিগঞ্জ এলাকায় ধস নামে বলে মনে করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এখানেও আমার ধারণা সাধারণ মানুষের কোনও দোষ থাকবে না। যদি কোনও বিপর্যয় হয়, সরকারকেই তার দায় নিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, ভূমিধসের কারণে কয়েকশো বাড়ি এবং হোটেলে ফাটল ধরেছে জোশীমঠে। আউলি রোপওয়ের কাছে এবং অন্যান্য এলাকায় বিস্তৃত ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাটিতে তলিয়ে যাচ্ছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ। ঘরবাড়ি এবং জীবিকা হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বাসিন্দারা। অনিয়ন্ত্রিত ঘরবাড়ি-হোটেল অথবা বাঁধ নির্মাণ, বন নিধন, বনে আগুন এবং কোটি কোটি টাকার রাস্তা প্রকল্পের কারণে বিঘ্নিত পর্বতশ্রেণির বাস্তুতন্ত্র। কয়েক দশক ধরেই এ ব্যাপারে সতর্ক করে আসছেন পরিবেশবিদ এবং কর্মীরা। ঝুঁকিগুলিকে আগেই চিহ্নিত করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু লা-পরোয়া মনোভাব আজ জোশীমঠকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এক অপ্রতিরোধ্য সংকটের সামনে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় নিম্নমুখী তাপমাত্রার পারদ! কনকনে ঠান্ডা ফিরছে?