এগরা: শনিবার সকালে এগরার খাদিকুলে বিস্ফোরণে নিহত এবং আহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, নিহতদের পরিবারের হাতে আড়াই লক্ষ করে টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। এবং পরিবার পিছু একটি করে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হচ্ছে।
মমতা বলেন, “এখানে যে বেআইনি বাজি কারখানায় ১১ জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে আমি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই ঘটনা থেকে আমাদের চোখ খুলে গেছে। আমরা ঠিক করেছি, আগামী দু’মাসের মধ্যে আমার কাছে একটা রিপোর্ট আসবে। বেআইনি বাজি কারখানা নিয়ে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ওই রিপোর্ট দেবে। অনেক গরিব মানুষ বাজি কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের কাজ যাতে না যায়, সেটা আমি দেখব। আবার তাঁদের জীবনও যাতে নষ্ট না হয়, সেটাও দেখব। আমরা সরকারের তরফে বাজি কারখানার জন্য ক্লাস্টার তৈরি করব। ফায়ার ক্র্যাকার নয়, গ্রিন ক্র্যাকার তৈরির ক্লাস্টার তৈরি কবর”।
মতা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে টাকার চেক তুলে দিয়ে বলেন, ‘‘অন্তত সংসার চালান।’’ তাঁর কথায়, “বাজি কারখানায় মৃতদের পরিবারকে দুর্বল না হওয়ার অনুরোধ করব। আমি জানি দুঃখ কখনও শেষ হয়ে যায় না। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। এটা আপনার হাতেও ছিল না, আমার হাতেও ছিল না। যিনি বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করেছেন, তার জীবনও চলে গিয়েছে। পরিবারের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল কিন্তু সে তখন মৃতপ্রায় অবস্থায় ছিল। কটকে গিয়ে আমাদের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা কিছু বলায় আগেই সে মারা যায়”।
মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নেন আরও কারও চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি না। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির খুদে সদস্যদের পড়াশোনা চালানোর অসুবিধা হলে সেটাও প্রশাসন দেখবে বলে জানান মমতা। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “এই ঘটনার জন্য আপনাদের সকলের কাছে আমি মাথা নত করে ক্ষমা চাইছি। কোনো রকম সাহায্য দরকার হলে বলবেন”।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে বেআইনি খাদিকুলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হয় কারখানার মালিক ভানু বাগ-সহ মোট ১১ জনের। আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে সেখানে কর্মরত কর্মীদের ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ বাইরে পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে দাবি স্থানীয়দের।
বিস্ফোরণের দিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি মৃত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মৃতদের পরিবারকে আড়াই লক্ষ ও আহতদের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।