শ্রয়ণ সেন
উপকূল থেকে ক্রমশ দূরত্ব কমছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ এটি অতি গভীর নিম্নচাপের রূপ নিয়ে সাগরদ্বীপ থেকে ৩৮০ কিমি এবং ক্যানিং থেকে ৫৩০ কিমি দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি চলে এসেছে কলকাতার দক্ষিণ অংশে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্বাভাবিকের থেকে ১ থেকে দেড় মিটার বেশি উচ্চতার ঢেউ উঠতে পারে। এর ফলে জলমগ্ন হতে পারে সুন্দরবনের সমগ্র এলাকা। জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২৯ মে পর্যন্ত ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে মাছ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদেরও ২৮ মে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে সৈকতে ভ্রমণে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
কী হতে চলেছে
অতি গভীর নিম্নচাপটি ক্রমে শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড় এবং তার পর প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। তার পর সেটি ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোবে। মনে করা হচ্ছে রবিবার ২৬ তারিখ বিকেল থেকে সোমবার ২৭ তারিখ সকালের মধ্যে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বকখালি ও বাংলাদেশের কুয়াকাটার মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে। সুতরাং সমগ্র সুন্দরবনকে এই ঝড়ের সরাসরি অভিঘাত সহ্য করতে হবে।
মেঘের ঘনঘটা পুরো বঙ্গোপসাগরে। এটিই ধীরে ধীরে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। ছবি সৌজন্যে Windy
বাতাসের গতিবেগ কত হতে পারে
রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আজ শনিবার বিকেল থেকে হাওয়ার গতিবেগ বাড়বে। ২৬ সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট বাড়বে। ২৬ রাত থেকে ২৭ সকাল পর্যন্ত ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে।
কলকাতা, হাওড়ায় ঝোড়ো হাওয়ার বেগ উঠতে পারে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার মতো। প্রভাব বেশি থাকতে পারে ২৬ রাত থেকে ২৭ সকাল পর্যন্ত।
পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হুগলি, পূর্ব বর্ধমানে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া দিতে পারে।
বৃষ্টিপাতের সতর্কতা
শনিবার থেকে বৃষ্টি হবে উপকূল অঞ্চলে। রবিবার এবং সোমবার দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়ায়।
ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে দফায় দফায় মাঝারি এবং মাঝেমধ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
২৭ এবং ২৮ তারিখ উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কোচবিহার আর আলিপুরদুয়ার এ অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।