কলকাতা: ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’, ‘সূর্য ঢলে গেল’র স্রষ্টা পাড়ি দিলেন অনন্তের পথে। প্রয়াত প্রখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার।
বেশ কিছু দিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন লেখক। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সোমবার বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে তাঁর জীবনাবসান হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
১৯৪২ সালে উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটায় জন্ম। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। যে কারণে, পরবর্তীতে তাঁর গল্পে, উপন্যাসে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে উত্তরবঙ্গের অনন্য সৌন্দর্য। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে। তিনি কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। কলকাতাতে উচ্চশিক্ষা ও লেখালেখির জীবন শুরু।
শুরুতে ছোটগল্প লিখেই খ্যাতি। ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত হয় সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’। ছাপা হয়েছিল ‘দেশ’ পত্রিকায়। তারপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক কালজয়ী উপন্যাস উপহার দিয়েছেন তিনি। উত্তরাধিকার, কালপুরুষ, কালবেলা-সহ একাধিক কালজয়ী উপন্যাসের স্রষ্টা সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরষ্কার প্রাপ্ত লেখক। তাঁর উপন্যাস ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্যে তাঁকে স্থায়ী আসন দিয়েছে বলে মনে করা হয়। যার অন্তিমপর্ব ‘মৌষলকাল’। গোয়েন্দা চরিত্র অর্জুনের সৃষ্টি করেছিলেন সমরেশ মজুমদার।
১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার পান সমরেশ মজুমদার। সাহিত্য আকাডেমি, বঙ্কিম পুরস্কার-সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ সালে তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মান প্রদান করে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় সমরেশ মজুমদারের মেয়ে দোয়েল সংবাদমাধ্যমকে জানান, তার আগের দু’দিন কেবিনে রাখা হয়েছিল প্রখ্যাত সাহিত্যিককে। কিন্তু শনিবারই বিকেলে তাঁকে আইসিইউতে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা পরের ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখবেন বলেছিলেন। রবিবার পরিবারের সূত্রে জানানো হয়, কিছুটা ভালো আছেন লেখক। কিন্তু তার পরেও শেষরক্ষা হল না।
আরও পড়ুন: ফের ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রার পারদ, নেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস