কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)-কে। ভোটের আগে থেকেই তিনি রাজ্যকে ইঙ্গিতবাহী বার্তা দিয়ে সফর করেছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। শনিবার ভোটগ্রহণের দিনেও তাঁকে দেখা গেল স্বমহিমায়। ভোটের দিন রাস্তায় নেমে তাঁর বার্তা, “ভোট ব্যালটে হওয়া উচিত, বুলেটে নয়”।
শনিবার, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল। হিংসার ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেন এবং ভোটারদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। যা অত্যন্ত নজিরবিহীন।
এদিন সকাল ৭ টা নাগাদ রাজভবন থেকে বের হন রাজ্যপাল। বুথে বুথে যান তিনি। খতিয়ে দেখেন পরিস্থিতি। অশান্তিপ্রবণ এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ শুনে নেন। সকালেই কল্যাণী হাইওয়ে দিয়ে বাসুদেবপুর যাওয়ার সময় বারাকপুর এক নম্বর ব্লকের কাউগাছি-২ পঞ্চায়েতের সিপিএম ও বিজেপির প্রার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকায়। অভিযোগ জানানো হয় যে শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে না। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীকে রাজভবনের পিস রুমের দুটো নম্বার দিয়ে বললেন বিস্তারিত অভিযোগ জানাতে বলেন।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, “শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আশা করেছিলাম। কিন্তু চতুর্দিকে খুন হচ্ছে। মানুষ জানিয়েছে গুন্ডারা ভোট দিতে যেতে বাধা দিচ্ছে। প্রিসাডিং অফিসারও কোনো কোনো সময় সহায়তা করছেন না। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। ভোট ব্যালটে হওয়া উচিত, বুলেটে নয়। সকলকে বলব গণতন্ত্রের নিয়ম মেনেই ভোট দিন”।
এই প্রথম বার রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার সমস্যা মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গিয়েছে রাজভবনকে। সাধারণ মানুষের অভিযোগের সমাধানের জন্য নিজের সরকারি বাসভবনে একটি “পিস হোম” খুলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
ভোটের আগে ভাঙড়, ক্যানিং, দিনহাটা, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যপাল। যেখানেই অশান্তির অভিযোগ উঠছে, সেখানেই চলে গিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে শাসক দলের অভিযোগ, রাজ্যপাল একটা সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সম্প্রতি বলেন, “প্রচার শেষের সুযোগ নিয়ে ইঁদুরের মতো গর্ত দিয়ে ঢুকে তিনি ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁর এই রাজনীতি সফল হবে না”।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে প্রাণহানি, অধিকাংশ তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক