পশ্চিমবঙ্গে এবার থেকে তাপপ্রবাহকেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে গণ্য করা হবে। গ্রীষ্মের দাবদাহে একাধিক মৃত্যুর ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহে মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
গত ১৯ আগস্ট মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ‘স্টেট এগজিকিউটিভ কমিটি’র বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ২৫ আগস্ট রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা ও সিভিল ডিফেন্স দফতর এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড (এসডিআরএফ)-এর গাইডলাইন অনুযায়ী বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, ভূমিকম্প, সুনামি প্রাকৃতিক দুর্যোগের আওতায় আসে। তবে রাজ্য সরকার চাইলে বিশেষ পরিস্থিতিতে আলাদা ঘটনাকেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করতে পারে। সেই অধিকার ব্যবহার করেই এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার হিটওয়েভ ছাড়াও নদী ভাঙন, ভারী বৃষ্টি, বন্য প্রাণীর আক্রমণ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু, জঙ্গলে আগুন-সহ মোট ১৪টি ঘটনাকে রাজ্যভিত্তিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করেছে।
এর ফলে এতদিন বজ্রাঘাত, দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ড, নৌকাডুবি, গাছ পড়া কিংবা দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও এবার থেকে হিটওয়েভ ও নদী ভাঙনের মতো ঘটনার ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হবে। প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, এই খরচ এবার থেকে এসডিআরএফ তহবিল থেকে মেটানো যাবে। এসডিআরএফের বার্ষিক বরাদ্দের ১০ শতাংশ অর্থ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণে ব্যবহার করা যায়।
তবে ক্ষতিপূরণ পেতে গেলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বাধ্যতামূলক বলে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হিটওয়েভে মৃত্যুর ক্ষেত্রে শরীরের অভ্যন্তরীণ পেশি ফেটে যাওয়া ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ লাল হয়ে যাওয়ার মতো বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এই রিপোর্ট যাচাইয়ের পরেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
গত বছর গ্রীষ্মকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডায় তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৭.২ ডিগ্রিতে, যা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৬ ডিগ্রি বেশি। সেই সময়েই তাপপ্রবাহে বহু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তার পরেই নবান্ন এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বাড়ছে ‘থান্ডারস্টর্ম অ্যাজমা’র দাপট! হঠাৎ আবহাওয়া বদলে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বহু মানুষ