কলকাতা হাই কোর্ট জানতে চেয়েছে, রাজ্যের বন্যাকবলিত তিন জেলায়, বিশেষত পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ায়, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে। বৃহস্পতিবার, প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ৩ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যকে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মামলা করেন আইনজীবী শঙ্কর দলপতি। সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট জানতে চায়, বিশেষ করে তিন জেলায়, যেখানে বন্যার কারণে পরিস্থিতি সংকটজনক, সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার।
গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের জেরে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারে জমা জলের পরিমাণ বেড়ে যায়। এরপর ডিভিসি থেকে জল ছাড়া হলে পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।
রাজ্যের অভিযোগ, ডিভিসি পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই জল ছেড়ে দেওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকেও এই বিষয়ে দোষারোপ করেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, বিরোধীদের দাবি, রাজ্য সরকার নিজেদের বাঁধ থেকেও জল ছেড়েছে, যার ফলেই বন্যার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রাজ্যের সেচ দফতর থেকে আটটি জেলার প্রশাসনকে আগে থেকেই জল ছাড়া হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।
বন্যার্তদের পাশে ডিভিসি
এই পরিস্থিতিতে, ডিভিসি তাদের কর্মীদের এক দিনের বেতন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। ডিভিসির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার রাজেশ কুমার এক বার্তায় উল্লেখ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক অঞ্চল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং প্রচুর মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। তাই এই দুর্যোগের সময়ে তাঁদের সাহায্য করা আমাদের সমবেত দায়িত্ব।
ডিভিসির এই ত্রাণ উদ্যোগ কর্মীদের জন্য ঐচ্ছিক। যদি কোনও কর্মী অনিচ্ছুক থাকেন, তাহলে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইমেলের মাধ্যমে তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
এদিকে, কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্যের কাছ থেকে এই তিন জেলায় বন্যা মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য চাইছে। রাজ্য সরকারের দেওয়া রিপোর্টেই নির্ভর করবে এই মামলা কীভাবে এগোবে।
সব খবরের আপডেট পড়ুন এখানে