হুগলির গোঘাটের আগাই গ্রাম। বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় গ্রামের আর পাঁচটা মেয়ের মতো পাড়ার পুকুরে স্নান করতে যেতে হতো শিখা দুলে ও তাঁর মাকে। ২২ বছরের শিখা দুলে—কেবিসি (কোন বনেগা কোড়রপতি) সিজন ১৬–এর প্রতিযোগী জয়ন্ত দুলের বোন। কিন্তু এখন আর তাঁকে গ্রামের পুকুরে স্নানকতে যেতে হয় না। তাদের মাটির বাড়ির পাশেই তৈরি হয়েছে পাকা শৌচাগার। যার দেওয়ালে লেখা ‘গিফটেড বাই অমিতাভ বচ্চন’।
২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট প্রচারিত কেবিসি-র এক পর্বে জয়ন্ত দুলে তাঁর পরিবারের এই দারিদ্র্য ও অসুবিধার কথা জানিয়েছিলেন। তখনই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অমিতাভ বচ্চন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— “এই খেলা জিতো বা হারো, আমি তোমার ঘরে একটি বাথরুম তৈরি করে দেব, নিজের খরচে।”
প্রায় এক বছর পর, অক্টোবর ২০২5-এ, সেই প্রতিশ্রুতি রাখলেন ‘বিগ বি’। জয়ন্ত দুলের অ্যাকাউন্টে ২ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দিলেন, যার অর্থে তৈরি হয়েছে এই বহু প্রতীক্ষিত বাথরুমটি।
জয়ন্ত, যিনি গোঘাটের স্বামী বিবেকানন্দ কলেজ অফ এডুকেশনের অতিথি অধ্যাপক। তিনি বলেন, “অমিতাভজির সঙ্গে দেখা হওয়াটাই ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু তিনি যা করেছেন, তা স্বপ্নেরও বাইরে। শুধু একটি বাথরুম নয়, এটি আমাদের পরিবারের মর্যাদা ফিরিয়ে এনেছে।”
শিখা বলেন, “আমি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় মাস্টার্স করেছি, এখন ডি.এল.এড কোর্সে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায়। প্রতিদিন গ্রামের পুকুরে স্নান করতে যাওয়া ছিল অত্যন্ত লজ্জাজনক। অমিতাভজির এই উদ্যোগ আমাদের মতো মহিলাদের মর্যাদা রক্ষার প্রতীক।”
শিখা আরও জানান, “এই উদ্যোগ শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, এটি মহিলাদের প্রতি সম্মানের প্রকাশ। আমরা সারাজীবন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।”
জয়ন্তের বাবা ভাদু দুলেও অমিতাভ বচ্চনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “তিনি আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের জীবনে এক অবিশ্বাস্য পরিবর্তন এনে দিয়েছেন।”বলিউডে আগে ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’ সিনেমার মাধ্যমে শৌচাগারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু এবার বাস্তবে সেই বার্তাকে বাস্তবায়িত করলেন অমিতাভ বচ্চন।
আরও পড়ুন: এ বার টোটোতেও বাধ্যতামূলক রেজিস্ট্রেশন, বেঁধে দেওয়া হল সময়সীমা