নিজস্ব প্রতিনিধি: আমতার কাছে খড়িয়প গ্রামে শ্রীরামকৃষ্ণ প্রেমবিহার আশ্রমে সারদা-দুর্গাপূজার এ বছর ২৫তম বর্ষ। ১৯৯৫ সালে স্বামী সম্বুদ্ধানন্দের হাত ধরে পথ চলা শুরু করে খড়িয়পের আশ্রম। এর চার বছর পর, অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে এখানে দুর্গাপুজো শুরু হয়। এখানে মা সারদাকে দুর্গা রূপে পুজো করা হয়। তাই মণ্ডপে দুর্গার প্রতিমার পাশেই রয়েছেন মা সারদা।
স্বামী বিবেকানন্দের কাছে মা সারদা ছিলেন জীবন্ত দুর্গা। স্বামীজি তাঁর গুরুভাই স্বামী শিবানন্দকে বলেছিলেন, “বাবুরামের মায়ের বুড়ো বয়সে, বুদ্ধির হানি হয়েছে, জ্যান্ত দুর্গা ছেড়ে মাটির দুর্গা পুজো করতে বসেছে। দাদা, বিশ্বাস বড়ো ধন, জ্যান্ত দুর্গাপুজো দেখাব তবে আমার নাম।” জগৎজননীকে দুর্গা রূপে পুজোও করতেন স্বামীজি। তাঁকেই অনুসরণ করে এই মঠ। দুর্গা রূপে এখানেই পূজিত হন মা সারদা।
২০১৫ সালে বসুন্ধরা পুজোর মাধ্যমে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু হয়। আর শুক্রবার ষষ্ঠীর শুভলগ্নে সেই নির্মীয়মাণ মন্দিরে মূল বেদি রচিত হল এবং মঠের পুষ্করিণী ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা হল। এই উপলক্ষ্যে এক বিশাল শোভাযাত্রা পূজামণ্ডপ থেকে শুরু হয়ে পুষ্করিণীকে প্রদক্ষিণ করে সেখানে নানা আচার পালন করে মন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণের মূল বেদির কাছে পৌঁছোয়। শোভাযাত্রা শুরুর আগে আশ্রম-চত্বরের বেলতলায় শুদ্ধিকরণ ও সূর্যার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
শোভাযাত্রার পুরোভাগে ছিল কিশোর ‘প্রমুখ’রা, যারা এই পরম্পরা ভবিষ্যতে ধরে রাখবে। ছিলেন পুরুষ ও নারীভক্তরা। পুরুষদের মাথায় ছিল জলভরতি পিতলের কলস। মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে তাঁরা অর্ধেক জল উৎসর্গ করেন পুষ্করিণীতে এবং বাকি অর্ধেক জল শ্রীরামকৃষ্ণের মূল বেদিতে। নারীভক্তদের হাতে ছিল বরণডালা ও পাখা। অন্য নারীভক্তদের শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্যে তাঁরা ওই বরণডালার সামগ্রী দিয়ে পুষ্করিণীকে বরণ করেন। শোভাযাত্রায় ছিলেন মঠের আচার্য স্বামী সম্বুদ্ধানন্দ-সহ অন্য সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারী মহারাজরা।
শোভাযাত্রায় যাঁরা ছিলেন তাঁরা সকলে পুষ্করিণী থেকে শ্রীরামকৃষ্ণের নির্মীয়মাণ মন্দিরের মূল বেদির সামনে উপস্থিতি হন। তাঁদের উপস্থিতিতে মঠের সন্ন্যাসী মহারাজরা শ্রীরামকৃষ্ণের মূল বেদিকে পূজা করেন। স্বয়ং আচার্য স্বামী সম্বুদ্ধানন্দ আরতি সুসম্পন্ন করেন।