কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের আবহে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে! রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
কমিশনার পদে রাজ্যপাল ছাড়পত্র দেওয়ার পরেই নবান্ন রাজীবকে ওই পদে বসানো হয়েছিল। এর পর রাজীবের জয়েনিং রিপোর্ট যায় রাজভবনে। কিন্তু সই না করেই তা ফেরত পাঠিয়ে দিলেন রাজ্যপাল বোস। ঘটনায় প্রকাশ, রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনার জন্য রাজভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে। তিনি উপস্থিতি না থাকাতেই এই পদক্ষেপ বলে রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনাচক্রে, বুধবারই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, আদালতের কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত নির্দেশ পালন করতে না চাইলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা দিতে পারেন। তার পরেই রাতে জানা যায়, রাজীবের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।
মনোনয়নের পরবর্তী বিভিন্ন হিংসার ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য রাজীব সিনহাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু কাজ আছে বলে কমিশনার সেই তলব এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ। সোমবার কমিশনার রাজভবনের তলব এড়িয়েছিলেন। বুধবারও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেননি কমিশনার। এর পরই কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ভর্ৎসিত হওয়ার পর এবার, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট নবান্নে ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ বার সেই রাজীবেরই যোগদান রিপোর্টে সই না করে, তা ফেরত পাঠানোয় নতুন করে টানাপড়েন তৈরি হল। এখন প্রশ্ন, তা হলে কি আর পদে থাকতে পারবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার?
এ প্রসঙ্গে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, রাজ্যপাল যাই করুন না কেন, কোনো অবস্থাতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে রাজীবকে তাঁর পক্ষে সরানো সম্ভব নয়। কারণ, রাজ্যপালের অনুমোদনের পরেই তিনি কমিশনারের দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। রাজ্যপালের সম্মতি নিয়েই রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীবকে বসিয়েছে। তাঁকে এক তরফা ভাবে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা সাংবিধানিক ভাবে রাজ্যপালের নেই বলেই ওই অংশের মত।
অন্য দিকে, বুধবারই কমিশনকে কড়া বার্তা দিয়েছে আদালত। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, “চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন, রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।”
আরও পড়ুন: জেলা পিছু মাত্র ১ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী, ফের আদালতে যাওয়ার আঁটঘাঁট বাঁধছে বিরোধীরা