কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ অব্যাহত। শুক্রবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ালে রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান বলে অভিযোগ। মহিলাদের ওয়ার্ডে ভাঙচুর, ডাক্তারদের হেনস্থা এবং সিসিটিভি ফুটেজে নজরদারি না রাখার অভিযোগে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। আহত হন সাতজন, যাঁদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্সও রয়েছেন।
এই ঘটনার পরই হাসপাতালের নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের বক্তব্য, “এমন নিরাপত্তাহীন পরিবেশে কাজ করা অসম্ভব। আমরা প্রতিশ্রুতি চাই না, আমাদের প্রয়োজন কার্যকরী পদক্ষেপ।” তাঁরা আরও বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে ৩৬০টি সিসিটিভি ক্যামেরার বদলে মাত্র ৪০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীও নিযুক্ত করা হয়নি।” এর ফলে, হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শনিবার স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের সঙ্গে বৈঠকে বসে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। বৈঠকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি, সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বৃদ্ধি, এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন স্বাস্থ্যসচিব। তবে, ডাক্তারদের অভিযোগ, গত এক মাস ধরে তাঁরা একই প্রতিশ্রুতি শুনে আসছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, “নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ শুরু করব না।”
অন্যদিকে, রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকেও উত্তেজনা কমছে না। শুক্রবার রাতে এক রোগিণীর মৃত্যুর পরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালের চত্বরেই ধর্না দেন তাঁরা। অভিযোগ, রোগিণীর সঠিক সময়ে চিকিৎসা হয়নি, ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ, কিন্তু রোগীর পরিবার জানিয়েছে, যতক্ষণ না ধৃতদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ তাঁরা দেহ গ্রহণ করবেন না। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল চত্বরে চলছে তীব্র উত্তেজনা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তাতেও ডাক্তারদের আন্দোলন থামছে না। তাঁরা দাবি করেছেন, “শুধু প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নয়, আমরা কার্যকরী পদক্ষেপের পরই কাজে ফিরব।”
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us