শনিবার সকালে শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সকাল ১১টা নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ড শুরু হয় এবং মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের দোকানগুলিতে। এতে ১৫টিরও বেশি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বাজারের বেশিরভাগ দোকানই ছিল পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য, এবং ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের, যা সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১৫টিরও বেশি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই শিলিগুড়ি পুরসভা এবং স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করে। তবে আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিএসএফ-কে তলব করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়, তবে বেশ কিছু দোকান পুড়ে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিধান মার্কেট শিলিগুড়ির অন্যতম বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র। প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা এখানে আসেন। তাই এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ বিপুল হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী তাঁদের স্টকের পুরো মালপত্র হারিয়েছেন। বাজারের অনেক দোকানে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, এবং দমকলের কর্মীদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাব নিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র বলেন, “এই অগ্নিকাণ্ড খুবই দুঃখজনক। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সবরকম চেষ্টা করছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা করতে প্রস্তুত আছি।” স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় মানুষেরা জানান, বিধান মার্কেট এলাকায় ইলেকট্রিক সংযোগ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজার এলাকায় আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই, ফলে এমন পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। তাঁরা আরও বলেন, অতীতে বহুবার প্রশাসনকে সতর্ক করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের কারণে বাজার এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হয়েছে। আশপাশের রাস্তাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং দমকলের ইঞ্জিনগুলি অবিরাম কাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।