আরজি কর মেডিকেল কলেজের সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ জহর সরকার তাঁর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেইসঙ্গে রাজনীতি থেকেও সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা একটি চিঠিতে তিনি তৃণমূল সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘সরকার যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে তা অত্যন্ত অপ্রতুল এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’
জহরের চিঠিতে উঠে এসেছে, কেন মমতা ব্যানার্জি তাঁর আগের মতো সরাসরি ঘটনা সম্পর্কে পদক্ষেপ করছেন না, বিশেষ করে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে যাচ্ছেন না। আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে মমতা এবং অন্যান্য তৃণমূল নেতারা যে আন্দোলনকে বাম ও বিজেপির প্ররোচিত বলেছিলেন, সেটি জহর সরাসরি নিন্দা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত। সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন।’’
এই ইস্তফা তৃণমূলের মধ্যে প্রথম উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে কোনও শাসকদলের সাংসদ সরাসরি ইস্তফা দিয়েছেন। এর আগে রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ও এই আন্দোলন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছিলেন, তবে পদত্যাগের পথে যাননি।
অপরাজিতা বিলের সমালোচনায় সরব সমাজকর্মী ও আইনজীবীরা, মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি
জহরের চিঠিতে দুর্নীতির প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। তিনি লিখেছেন, ‘‘রাজ্যে যে ক্ষোভ এবং রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখছি, এর মূল কারণ হল কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং পছন্দের আমলাদের পেশিশক্তির আস্ফালন। জনগণের এই ক্ষোভ সরকারের প্রতি গভীর অনাস্থার প্রতিফলন।’’
তাঁর পদত্যাগে শাসকদল তৃণমূলের অস্বস্তি বেড়েছে এবং রাজনৈতিক মহলে তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। জহর সরকার বরাবরই স্বাধীনভাবে তাঁর মতামত প্রকাশ করে এসেছেন। এক্ষেত্রে তাঁর পদক্ষেপ স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।