খবর অনলাইন ডেস্ক: ২০১০ সালের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে যত ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে তা বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ বুধবার এই রায় ঘোষণা করেছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই নির্দেশ মানবেন না। হাইকোর্টের রায় নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একে বিজেপির ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে ওবিসি সংরক্ষণ চালু করেছিল, তা চলবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করে ওই বিলের খসড়া করা হয়েছিল এবং সেই খসড়া ক্যাবিনেটে ও পরবর্তী কালে বিধানসভায় পাশ হয়।
রাজ্যে পালাবদল হয় ২০১১ সালে। ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে হাইকোর্টের এই নির্দেশ কার্যত কার্যকর হবে সেই সব সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে যেগুলি ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইস্যু করা হয়েছে। ২০১২ সালে রাজ্য সরকার একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেন। সেই আইন অনুসারে বেশ কিছু সম্প্রদায়কে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করে সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হয়। হাইকোর্ট সেই সংরক্ষণ বাতিল করে দিল।
হাইকোর্টের বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকার ২০১০ সালের আগে ৬৬টি শ্রেণিকে ওবিসি তথা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি বলে চিহ্নিত করেছিল। এ দিনের নির্দেশে তাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। কারণ হাইকোর্টে যে আবেদন জমা পড়েছিল, তাতে এদের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয়নি।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বলেছে, ২০১০ সালের পরে যে সব ওবিসি শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছে, তা আইন মেনে করা হয়নি। তবে যাঁরা এই সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়ে গিয়েছেন বা চাকরির পরীক্ষায় সফল হয়েছেন, তাঁদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। কারণ তাঁদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে বাকিরা চাকরি প্রক্রিয়ায় এই শংসাপত্র ব্যবহার করতে পারবেন না বলে হাইকোর্টের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়োজনে উচ্চতর আদালতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালত সেই রায়ে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এ বার ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করার যে রায় হাইকোর্ট দিল, তার বিরুদ্ধে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যায় কিনা, এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন
সন্দেশখালিতে ‘খেলা’ ঘোরাতে সরল স্বীকারোক্তিই ভরসা তৃণমূলের