নন্দীগ্রাম : শহীদ স্মরণেও কমলো না রাজনৈতিক উত্তাপ। শহীদ স্মরণের মঞ্চ থেকে ফের উত্তাপ শুরু রাজ্য রাজনীতিতে। শহীদ স্মরণের মঞ্চ থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে কলার ধরে জেলে ভরার হুঁশিয়ারি তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পর নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক তাপমাত্রার পারদ যে তরতরিয়ে বাড়বে তা আবারও পরিষ্কার হয়ে গেল।
এখনও নন্দীগ্রামের মানুষের মনে দগদগে হয়ে রয়েছে ২০০৭ সালের রক্তক্ষয়ী জমি আন্দোলন। লাল দুর্গের বিরুদ্ধে জমি পুনরুদ্ধার করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে আন্দোলন কেড়ে নিয়েছিল বহু তরতাজা প্রাণ সেই ক্ষত এখন কাটিয়ে উঠতে পারেনি নন্দীগ্রামের মানুষ। নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনে সেই সমস্ত শহিদদের স্মরণ করে হাড় হিম করা ঠাণ্ডায় কাকভোরে মোমবাতি মিছিল করলো তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। ভাঙ্গাবেড়ায় শহিদ বেদীতে মাল্যদান করে তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব। হাড় হিম করা ঠান্ডায় শহীদ স্মরণ মঞ্চ থেকে বাড়লো রাজনৈতিক উত্তাপ।
এদিন শহিদ বেদীতে মাল্যদান করার পর শহিদ স্মরণ মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দেন কুণাল। তিনি বলেন, “ঠিক সিপিএমের মতোই বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর রাজনীতি করছেন।আগে সিপিএম সকলকে মিথ্যা মামলা দিয়েছে একের পর এক। সেই রাজনীতি আবার ফিরছে। বেইমান, গদ্দার শুভেন্দু সিবিআই, এনআইএ দেখিয়ে নিরাপরাধ তৃণমূল কর্মীদের, নিরাপরাধ নন্দীগ্রামবাসীকে জেলে ভরছে। ভগবান, আল্লাহ থাকলে একদিন কলার ধরে শুভেন্দুকে জেলে ভরব।”
শনিবার বিজেপির পক্ষ থেকেও নন্দীগ্রামে পালন করা হয় শহিদ স্মরণ দিবস। বিজেপির এই কর্মসূচি সহ নারদা সারদার প্রসঙ্গ এবং শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কুনাল ঘোষ বলেন, “গ্রেপ্তারি এড়াতে তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।নন্দীগ্রামে শহিদদের রক্ত দিয়ে কেরিয়ার গড়েছেন শুভেন্দু। তাই তাঁর শ্রদ্ধা জানানোর কোনও অধিকার নেই।”
সালটা ২০০৭। ক্যালেন্ডারে জানুয়ারির ৭ তারিখ। নন্দীগ্রামের মাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই করতে গিয়ে শহিদ হলেন বেশ কিছু মানুষ। তারপর থেকেই প্রতিবছর এই দিনটিকে শহিদ স্মরণ দিবস হিসেবে পালন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও আগে এই দায়িত্ব ছিল শুভেন্দু অধিকারী কাঁধে। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল পরিবর্তন করেন তিনি। তারপর থেকেই এই দিনটি পালনের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় কুণাল ঘোষকে। অন্যদিকে এই দিনটি আলাদা ভাবে পালন করেন শুভেন্দু।