Home রাজ্য শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা: কার গাফিলতি? উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা: কার গাফিলতি? উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন

সোমবার সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কার গাফিলতি তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। রাঙাপানি ও আলুয়াবাড়ির মধ্যে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮ জন। দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে উঠেছে একাধিক তত্ত্ব। সিগন্যাল না মানা থেকে শুরু করে পুরনো প্রযুক্তির কামরা ব্যবহারের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে রেল।

রেলের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৫টা ৫০ মিনিট থেকে রাঙাপানি ও আলুয়াবাড়ির মাঝের অটোমেটিক সিগন্যাল বন্ধ ছিল। ফলে ট্রেন চলাচল হচ্ছিল অত্যন্ত ধীর গতিতে। পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিটের মাধ্যমে ট্রেন চলাচল করছিল। সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, TA912 ফর্মের ভিত্তিতে। একই সময়ে মালগাড়িটি ছেড়ে যায় ৮টা ৪২ মিনিটে। দুটি ট্রেনের মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ১৫ মিনিট। প্রশ্ন উঠছে, পেপার মেমো থাকলে গতি প্রতি ঘণ্টায় ১০ কিমি হওয়ার কথা, তবে কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল?একাংশের দাবি, মালগাড়ির চালক সিগন্যাল মানেননি। 

রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সব কামরাই ছিল পুরনো প্রযুক্তির ‘আইসিএফ কোচ’। ২০১৭ সালে রেল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, দুর্ঘটনা কমাতে আইসিএফ কামরা সরিয়ে এলএইচবি (লিঙ্ক হফম্যান বুশ) প্রযুক্তির উন্নত কামরা লাগানো হবে। এলএইচবি কামরা থাকলে দুর্ঘটনার সময় কামরাগুলির ভারসাম্য অনেক বেশি থাকে, সামনাসামনি ধাক্কা লাগলে কামরা একটির উপর আরেকটি উঠবে না।” এলএইচবি কামরা দ্রুত গতিতে ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম এবং দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক।

গত বছরের জুনে ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগার কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও একটি মালগাড়ির মধ্যে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি ঘটল এবার শিলিগুড়ির কাছে। প্রশ্ন উঠছে, কবচ প্রযুক্তি কেন এই ট্রেনে লাগানো ছিল না? কবচ হল ভারতীয় প্রযুক্তি যা মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে সাহায্য করে। ২০২০ সালে কবচকে জাতীয় স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

শিয়ালদহমুখী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা, মালগাড়ির ধাক্কায় লাইনচ্যুত দুটি কামরা, মৃত ৯

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কবচ প্রযুক্তি বোঝাতে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “কবচ প্রযুক্তি ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে সাহায্য করে।” কিন্তু সে সবের পর কবচ প্রযুক্তি লাগানো লাগানো রেল কর্মপদ্ধতি কচ্ছপের গতি হার মানাবে। 

এই ঘটনার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি নিজেও প্রাক্তন রেলমন্ত্রী, রেলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এখন শুধুই বন্দে ভারতের নামে প্রচার চলছে। রেলের বাজেট তুলে দিয়ে রেলকে গুরুত্বহীন করা হয়েছে।”

মমতা রেলকর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং রেল মন্ত্রকের অবহেলা নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, “রেল ছেড়ে লোকে এখন বাইক, সাইকেলে যাতায়াত করছে।”

এই দুর্ঘটনার পর নজর এখন রেল কর্তৃপক্ষের তদন্তের উপর, যেখানে এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা হবে। দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে রেলের আরও উন্নত প্রযুক্তি ও যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি।

কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version