অডিট হয়নি ঠিকমতো—এই অজুহাত তুলে মাঝে মধ্যেই রাজ্যের প্রাপ্য আটকে দেওয়ার হুমকি দেয় কেন্দ্র। সেই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে এবার বড়সড় ডিজিটাল পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। চালু হল নিজস্ব অডিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যার মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে অডিটের কাজ হবে দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে।
এই নয়া ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি পঞ্চায়েতের হিসেব নিকেশ সংক্রান্ত নথি সংরক্ষিত থাকবে একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালে। ‘অডিট অনলাইন’ পোর্টালের মাধ্যমে এখন থেকে এগজামিনার অব লোকাল অ্যাকাউন্টস (ELA)-রা যে কোনও সময়, যে কোনও স্থান থেকে অডিট সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ এবং মূল্যায়ন করতে পারবেন। প্রশাসনিক মহলের মতে, পুরনো গুরুত্বপূর্ণ নথি খুঁজে পাওয়ার সমস্যা দূর হবে এই ব্যবস্থায়।
এছাড়া, পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের আর সদর দপ্তরে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে অডিটের নথি জমা দিতে হবে না। বরং, নির্ধারিত সময়ে SMS করে পঞ্চায়েতগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হবে কোন নথি কখন জমা দিতে হবে। সবটাই চলবে অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে।
এই উদ্যোগের আওতায় অডিটের অগ্রগতি রিয়েল টাইমে মনিটরিং করা যাবে বিভাগীয় সদর দপ্তর, ELA’র অফিস এবং জেলার সদর দপ্তর থেকে। ফলে সময় মতো অডিটের কাজ শেষ করাও হবে অনেক সহজ।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে বিশেষ নজর। ওটিপি ছাড়া কোনও আধিকারিক পোর্টালে লগইন করতে পারবেন না। প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের কাছে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP)।
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, এই ডিজিটাল অডিট ব্যবস্থার দায়িত্বে রয়েছে বেঙ্গল এজি (Accountant General)। মূলত তাদের কাজের সুবিধার জন্যই ‘স্মার্ট পঞ্চায়েত’ প্রকল্পের অধীনে তৈরি হয়েছে এই পোর্টাল।
রাজ্যের এক আধিকারিক বলেন, “আগে পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে নথি নিয়ে সদর দপ্তরে গিয়ে দিনভর অপেক্ষা করতে হতো। সেই সমস্যা এবার মিটবে।”
এই ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, কেন্দ্রের অজুহাত বন্ধ করে পঞ্চায়েত স্তরে স্বচ্ছতা ও গতি আরও বাড়ানো। একই সঙ্গে, ভবিষ্যতে কোনও প্রকার অডিট-সংক্রান্ত অভিযোগ যাতে না ওঠে, তা নিশ্চিত করাও।