জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত মুস্তাকিন সর্দারকে ফাঁসির সাজা দিল বারুইপুর আদালত। শুক্রবার, বারুইপুর ফাস্ট অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজেস কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এই রায় ঘোষণা করেন এবং মৃতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এটি একটি অত্যন্ত নৃশংস এবং বিরল ঘটনা। ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে সন্দেহের কোনও জায়গা নেই, এবং বিচারক সঠিকভাবে দোষীকে ফাঁসির সাজা দিয়েছেন।
গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায় নাবালিকা। বাড়ির লোকের সঙ্গে তল্লাশি চালাতে থাকে স্থানীয় কুলতলি থানার পুলিশ। শেষপর্যন্ত বাড়ির থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার দেহ।
গভীর রাতে বাড়ির কাছের জলাজমি থেকে নাবালিকা দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে জনতার সঙ্গে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী।
পুলিশ মুস্তাকিনকে গ্রেফতার করে এবং পরে পকসো আইন যুক্ত করা হয়। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয় এবং ২৬ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করা হয়। গত ৫ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়, যেখানে ৩৬ জন সাক্ষী দেন।
সাজা শোনার আগে মুস্তাকিন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এবং বিচারকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তার আইনজীবী বয়স ও পারিবারিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে শাস্তি লঘু করার আবেদন করেন। তবে সরকারি আইনজীবী এই ঘটনার নৃশংসতা তুলে ধরে ফাঁসির সাজা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি জানান, মেয়েটিকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে এবং তার শরীরে ৩৮টি আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা এই অপরাধকে ক্ষমার অযোগ্য করে তোলে।
আরও পড়ুন: ইডির মামলা থেকে জামিন পেলেন ‘কালীঘাটের কাকু’, হাই কোর্টের শর্তসাপেক্ষে অনুমতি