আগামী ১১ ও ১২ ডিসেম্বর পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকছে সুন্দরবনের জলপথে ভ্রমণ। ওই দু’দিন কোনও বোট বা লঞ্চ পর্যটকদের নিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করতে পারবে না। সুন্দরবন টাইগার রিজ়ার্ভ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জারি করা এক সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, বাঘশুমারির প্রথম পর্যায়ের কাজ চলবে এই দুই দিনে। তাই ওই সময় পর্যটন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য শুমারি চালানো হয়। জঙ্গলের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো, বাঘের পায়ের ছাপ সংগ্রহ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক চিহ্ন বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন হয়। এ বছর শুমারির প্রথম পর্যায় শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।
কর্তৃপক্ষের মতে, পর্যটকদের যাতায়াত এবং বোটের শব্দদূষণ বাঘশুমারির প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। তাই ওই দুই দিন জঙ্গল পর্যটকবিহীন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টাইগার রিজ়ার্ভের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ১১ ও ১২ ডিসেম্বর অনলাইন বুকিংও বন্ধ থাকবে। ফলে ওই সময়ে সুন্দরবনের কোনও পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না।
এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরই বোট মালিক এবং ট্যুর অপারেটরদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেরই ওই দু’দিনের আগাম বুকিং ছিল। সুন্দরবন বোটমালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই পর্যটকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বুকিং বাতিলের কথা এবং অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বোটমালিকদের দাবি, পর্যটন বন্ধ থাকায় তাঁদের আর্থিক ক্ষতি অনিবার্য। তা সত্ত্বেও পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ রক্ষার স্বার্থে তাঁরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাচ্ছেন। তাঁদের আশাবাদ—বাঘশুমারির কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হোক এবং আগামী দিনগুলিতে সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পর্যটনও আরও সুসংগঠিত হোক।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের বাঘশুমারি প্রায় প্রতি চার বছর অন্তর করা হয়। তবে এর মধ্যে ছোট অঞ্চলভিত্তিক পর্যবেক্ষণ বা প্রাথমিক গণনা প্রায় প্রতি বছরই চালানো হয়—যেমন এই ডিসেম্বরের প্রথম পর্যায়ের কাজ।
আরও পড়ুন: পাখিদের নতুন স্বর্গ কালিম্পং-এর ঝান্ডি! রুফাস নেকড হর্নবিলের আবাসে পর্যটন নয়, সংরক্ষণই লক্ষ্য
