কলকাতা: শেষ চেষ্টা করেও ‘মানভঞ্জন’ হল না তাপস রায়ের। সোমবার সকাল সকাল তাঁর বাড়িতে হাজির রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তার আগের দিন গিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের আর এক মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। এতো চেষ্টা সত্ত্বেও করে বরানগরের বিধায়কের মান ভাঙানো যায়নি। শেষমেষ তৃণমূল-ই ছেড়ে দিলেন তাপস।
গত ১ মার্চেই দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন বরানগরের বিধায়ক। সোমবার তাঁর মান ভাঙাতে শেষ চেষ্টা করেও দেখেছে তৃণমূল। তাঁর প্রতি দলীয় বঞ্চনার অভিমান শোনা গিয়েছে তাপসের মুখেই। দলত্যাগ প্রসঙ্গে তাপসের মন্তব্য, আর যাই হোক, তৃণমূল কংগ্রেস আমার জন্য নয়।…ইডি অভিযানের পর দলের তরফে কেউ ফোন করেননি। শেখ শাহজাহানকে ইডি টার্গেট করেছে এমন কথাও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমায় কিছু বলেননি’।
রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি পদ থেকে তাপস রায়কে সরিয়ে দেওয়া থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। তিনি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তুমুল আওয়াজ তুলেছেন। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় দল ছাড়ার কথা ভাবেন তিনি।
এ দিকে তৃণমূলের দাবি, তৃণমূলের সাফ কথা, যদি কেউ বলেন যে, তিনি পার্টির মধ্যে সম্মান পাচ্ছেন না, সেটা কেন প্রতিবার নির্বাচনের ১৫ দিন আগে বলা হয়। পার্টির একটি নির্দিষ্ট নীতি আছে এবং একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম আছে, সেখানে তিনি বলতে পারতেন। তবে কি তিনি একটি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন?
উল্লেখ্য, সোমবার তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাপস রায়। তাঁর ইস্তফা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া আগে দল থেকেও পদত্যাগ করেছেন তাপস। তিনি জানিয়েছেন যে দলের সব দায়িত্ব থেকেই তিনি ১ মার্চ পদত্যাগ করেছেন।
তবে, তৃণমূল ছেড়ে তাপস কোন দলে যোগ দেবেন, সেটা স্পষ্ট করেননি। কিন্তু এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। শুভেন্দু বলেন, “উনি কোনও রাজনৈতিক দলে যুক্ত হবেন কি না বা কোনও দলে যেতে চান কি না, তা নিয়ে কোনও প্রস্তাব আমার বা আমাদের কাছে আসেননি। এলে উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির মত নিয়ে আমাদের টিমের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের অনুমতি নিয়ে জানিয়ে দেব।” এরপরই ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, “তাপস রায় যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, তাতে মনে হয়েছে তিনি দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে পারেন।”
আরও পড়ুন: বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়