২৪ জুলাই, বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন—মহানায়ক উত্তমকুমারের প্রয়াণ দিবস। আর সেই দিনেই, মহানায়কের স্মরণে আয়োজিত ২০২৫ সালের ‘মহানায়ক সম্মান’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভাষা সুরক্ষার বার্তা দিয়ে ফের একবার প্রতিবাদী সুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চ থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় মমতা বলেন, “মহানায়ক উত্তমকুমার আমাদের সকলের প্রাণের মানুষ— আমাদের দেশের গর্ব, জাতির গর্ব, সংস্কৃতির গর্ব।” পাশাপাশি তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১২ সাল থেকে বাংলা সিনেমার শিল্পী ও কলাকুশলীদের ‘মহানায়ক’ সম্মান দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার।
তবে স্মরণ-সভার আবেগঘন পরিবেশেই হঠাৎ কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ভাষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি জাতির মেরুদণ্ড। মাতৃভাষায় কথা বলা আমাদের অধিকার। অথচ আজ বাংলা ভাষার উপর চলছে ভাষা-সন্ত্রাস। বাংলা ভাষায় কথা বললেই কেউ জেলে যাচ্ছে, কাউকে দেশান্তরী হতে হচ্ছে। দরকার হলে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে।”
মমতা জানান, বাংলা ভাষা বিশ্বে পঞ্চম, এশিয়ায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন। তবুও এই ভাষা চর্চার জন্য হেনস্থা হতে হচ্ছে বাংলাভাষীদের।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের শুধু বাংলা বলার জন্য গ্রেফতার, হেনস্থা কিংবা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। সেই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে এর আগেও ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেছিলেন, “বাংলা রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্কিমের ভাষা। বাংলা দেশের জাতীয় সঙ্গীতের উৎস। সেই ভাষার উপর সন্ত্রাস কেন?”
মমতা আরও বলেন, “আমি অন্য ভাষাকে অসম্মান করতে বলছি না। কিন্তু বাংলায় যাঁরা গান করেন, কাজ করেন, তাঁদের সম্মান দিন। বাংলা সিনেমা, বাংলা গান, বাংলা সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিন।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২৭ জুলাই ‘নানুর দিবস’ থেকে প্রতি শনি ও রবিবার বাংলা ভাষার উপর আক্রমণের বিরুদ্ধে পথে নামার ডাক দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: নন্দনে উত্তমকুমার স্মরণে ‘শিল্পী সংসদ’-এর চলচ্চিত্র উৎসব
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

