Home খবর রাজ্য চার্জশিটকে হাতিয়ার করে এবার সিবিআইয়ের উদ্দেশে ১০ প্রশ্ন জুনিয়র ডাক্তারদের

চার্জশিটকে হাতিয়ার করে এবার সিবিআইয়ের উদ্দেশে ১০ প্রশ্ন জুনিয়র ডাক্তারদের

0

খবর অনলাইনডেস্ক: আরজিকর কাণ্ডে সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে এ বার জুনিয়র ডাক্তারদের নিশানায় নিজাম প্যালেস। সোমবার বিকেলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে সিবিআইয়ের সামনে ১০টি প্রশ্ন রেখেছেন তাঁরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’ ওই ১০ প্রশ্নের জবাব যত শীঘ্র সম্ভব জানাতে বলেছে সিবিআইকে।

এই প্রশ্নগুলো হল:

১। ময়নাতদন্তে নির্যাতিতার দেহে এক ধরনের সাদা তরল পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল। পরে সেই তরল সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। সেই তরল পদার্থ কি পরীক্ষা করা হয়েছিল? সেটির ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছিল কি? সেই রিপোর্ট কোথায়? নির্যাতিতার শরীরের উপরিভাগে ধৃতের লালারসের নমুনা পাওয়া গিয়েছিল। চার্জশিটে এ সব বিষয়ের উল্লেখ নেই কেন?

২। ঘটনার দিন অর্থাৎ ৯ আগস্ট নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পাঁচ দিন পর, অর্থাৎ ১৪ আগস্ট কেন সেই সব নমুনা কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হল?

৩। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে ৯ আগস্ট গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু কেন ১২ আগস্ট রক্তের দাগ লেগে থাকা জামাকাপড় তাঁর ব্যারাক থেকে আনা হল?

৪। এটা আন্দাজ করা যায় যে, ধৃতের শরীরে যে সব আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তা নির্যাতিতার প্রতিরোধের ফলেই হয়েছে। নির্যাতিতার নখ থেকে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল সেখানে কি ধৃতের টিস্যুর নমুনা ছিল? চার্জশিটে এ সবের উল্লেখ নেই কেন?

৫। ৯ আগস্ট রাত পৌনে ১১টায় সিজার লিস্ট তৈরি হয়। সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয় রাত সাড়ে ১১টায়। কিন্তু এফআইআর দায়ের করা হয় রাত পৌনে ১২টায়। এফআইআর দায়ের হওয়ার আগেই কী ভাবে গ্রেফতারি? তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

৬। চার্জশিট অনুযায়ী, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার রাত ৩টে ২০ মিনিটে আরজি করে প্রবেশ করেন। ট্রমা কেয়ার ভবনে যান ৩টে ৩৪ মিনিটে। সেখান থেকে ৩টে ৩৬ মিনিটে বার হয়ে আসেন। এর পর যান আপৎকালীন ভবনে (সময়ের উল্লেখ নেই)। এর পর তাঁকে আপৎকালীন ভবনের তিন তলায় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে দেখা যায়। সময় ৪টে ৩ মিনিট। ৩টে ৩৬ মিনিট থেকে ৪টে ০৩— এই ২৭ মিনিট তিনি কোথায় ছিলেন? কী করছিলেন চার্জশিটে সেই কথার উল্লেখ নেই।

৭। ঘটনার কথা টালা থানায় জানানো হয়েছে? চার্জশিটে উল্লেখ নেই সেই কথারও।

৮। পুলিশ অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে তাঁর ব্লুটুথ ইয়ারফোনের ভিত্তিতে গ্রেফতার করেছে। হাসপাতালের সিসিটিভিতে তাঁর যা চলাফেরা ধরা পড়েছে, চার্জশিটে তার বৃত্তান্ত দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ৪টে ৩ মিনিটে সে চেস্ট ওয়ার্ডের দিকে যাচ্ছে তখন তাঁর গলায় ইয়ারফোনটি ছিল। ৪টে ৩২ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর গলায় ইয়ারফোনটি ছিল না। ৪টে ৩১ মিনিট নাগাদ তাঁকে সিসিটিভির সামনে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। সেই সময় কি তাঁর গলায় ইয়ারফোনটি ঝোলানো ছিল? চার্জশিটে এর স্পষ্ট উল্লেখ নেই।

৯। কলেজ কর্তৃপক্ষ এফআইআর দায়ের করলেন না কেন? নির্যাতিতার বাবা-মাকে কেন তা করতে হল?

১০। চার্জশিটে সে দিনের ঘটনাবলির সময়বৃত্তান্ত বিস্তারিত ভাবে দেওয়া রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, নির্যাতিতার বাবা-মা ঘটনার দিন সওয়া ১২টা নাগাদ আরজি করে পৌঁছোন। কিন্তু চার্জশিটে এটা বলা নেই যে, তাঁরা আসার পর কী হয়েছিল বা কেন তাঁরা তিন ঘণ্টা তাঁদের মেয়ের দেহ দেখতে পাননি?

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সোমবার শিয়ালদহ আদালতে চার্জ গঠন হয়। চার্জ গঠনের পর আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে উঠে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলে দাবি করেছেন। তিনি এ-ও দাবি করেছেন যে, এই ঘটনায় তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হয়েছে, যার নেপথ্যে রয়েছে সরকার। ধৃতের এই দাবির পরেই আবার আসরে নেমেছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version