দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দুর্গাপুর ব্যারাজ ব্রিজের সংস্কার শুরু হতে চলেছে। ১৯৬৪ সালের পর এই প্রথম এত বড় আকারে সংস্কার করা হচ্ছে ৭০০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর। বর্তমানে ব্যারাজের বেহাল দশা নিয়ে যানচালক ও স্থানীয়রা বহুদিন ধরেই অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। এবার সেই সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রায় ২৬ হাজার গাড়ির যাতায়াত ব্যাহত হতে পারে
এই ব্যারাজের উপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২৬ হাজার গাড়ি চলাচল করে, যার মধ্যে রয়েছে ৮ হাজার পণ্যবাহী ট্রাক। ভারী যানবাহনের কারণে ব্যারাজের উপর ব্যাপক চাপ পড়ে। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের প্রয়োজন ছিল।
বিকল্প পথ তৈরি, ৩ এপ্রিল থেকে শুরু হবে কাজ
সংস্কারকাজ চলাকালীন যান চলাচল সচল রাখতে ডাউনস্ট্রিমে বিকল্প পথ তৈরি করা হচ্ছে। ৫.৫ মিটার চওড়া এবং ১.২ কিমি লম্বা এই রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু হবে ৩ এপ্রিল থেকে। বিকল্প পথ পুরোপুরি তৈরি হলেই ব্যারাজের ডেক বদলের কাজ শুরু হবে।
৫০% ব্লকে সংস্কার, ১৫ জুনের মধ্যে কাজ শেষের পরিকল্পনা
পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেতুর ৫০% ব্লক নিয়ে ধাপে ধাপে কাজ করা হবে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ১৫ জুনের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের তদারকির জন্য ইতিমধ্যেই হাই-লেভেল ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে।
সংযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দুর্গাপুর ব্যারাজ
দুর্গাপুর ব্যারাজ শুধু শহরের নয়, পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পথ। ১৯৫৫ সালে তৈরি হওয়া ৬৯২ মিটার দীর্ঘ এই ব্যারাজের উপর দিয়েই ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক চলে গেছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলার সঙ্গে দুর্গাপুরের সরাসরি যোগাযোগ এই সেতুর মাধ্যমেই হয়।
বেহাল রাস্তা, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা
স্থানীয় বাসিন্দা ও চালকদের অভিযোগ, ব্যারাজের রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। অতীতেও একবার সংস্কার করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তার পিচ উঠে গিয়েছে। ফলে যানবাহনের গতি কমে গিয়ে যানজটের সমস্যা তৈরি হচ্ছে, পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন পরিবহণ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
সরকারের প্রতিশ্রুতি
রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংস্কারের পর ব্যারাজের উপর দিয়ে যান চলাচল আরও মসৃণ হবে। বিশেষত শিল্পাঞ্চল ও বিভিন্ন জেলার মধ্যে সংযোগ বজায় রাখতে, ভারী যান চলাচলের সুবিধার্থে এই সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এখন দেখার, সরকার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারে কিনা।