রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে প্রায় ছাব্বিশ হাজার চাকরি বাতিলের পরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তার পরিবেশ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নতুন প্যানেল তৈরি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি থাকলেও, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য কোনও রকম ছাড় মেলেনি।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার ফোনে চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি মানবিকতার খাতিরে বড় ঘোষণা করেন। তিনি জানান, আপাতত ‘সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প’-এর আওতায় গ্রুপ সি কর্মীদের জন্য মাসে ২৫ হাজার টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য মাসে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে কর্মীদের বেতনের পরিমাণ জানতে চান। এরপর বলেন, “কোর্ট চাকরি বাতিল করেছে। মানবিকতার দিক থেকে কিছু একটা ভাবা দরকার।” তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, রাজ্য সরকার গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের জন্যও রিভিউ পিটিশন জমা দেবে। মমতা আরও জানান, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে রিভিউ ফাইল করা হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন যে, যোগ্য-অযোগ্যতার বিচার এখন আদালতের অধীনে। রাজ্য সরকার শিক্ষা দফতরকে মামলার আওতার বাইরে রাখতে চাইলেও আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মানবিক সহায়তা চালিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি স্তরে দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ন’মাস চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা কাজে ফিরতে পারবেন না। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত আর্থিক সহায়তা চাকরিহারা বহু পরিবারকে কিছুটা স্বস্তি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পহেলগাঁও হামলায় স্বজনহারা পরিবারগুলির পাশে রাজ্য সরকার
পহেলগাঁওয়ে গত মঙ্গলবার সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন নিরীহ মানুষ, যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন সাধারণ পর্যটক। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন বাংলার তিনজন।
মানবিকতার খাতিরে ভয়াবহ এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, নিহত তিনজনের প্রতিটি পরিবারকে রাজ্যের তরফে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
শুধু তাই নয়, বিশেষভাবে আর্থিক অসচ্ছলতার কথা মাথায় রেখে, নিহত কলকাতার বিতান অধিকারীর পরিবারের জন্য বাড়তি সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিতানের বাবার নামে রাজ্য সরকার একটি পেনশন ফান্ড তৈরি করবে, যাতে তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা পেনশন পাবেন। পাশাপাশি বিতানের মায়ের নামে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডও করে দেওয়া হবে, যাতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ সুবিধা পান।
এছাড়া, বেহালা ও পুরুলিয়ায় নিহতদের পরিবারের কেউ যদি সরকারি চাকরির আবেদন করতে চান, তাহলে রাজ্য সরকার সেই ব্যবস্থাও করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই আর্থিক ও মানবিক সহায়তার মাধ্যমে রাজ্য সরকার এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থাকার বার্তা দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

