Home খেলাধুলো শুশুনিয়া পাহাড়ে হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম শৈলারোহণ প্রশিক্ষণ শিবির

শুশুনিয়া পাহাড়ে হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম শৈলারোহণ প্রশিক্ষণ শিবির

চলছে প্রশিক্ষণ।

সঞ্জয় হাজরা

অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় বাঙালির রক্তে যে অ্যাডভেঞ্চারের নেশা জুড়ে আছে এ কথা বলার অবকাশ রাখে না। কলকাতা ও কলকাতার শহরতলি অঞ্চল জুড়ে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সংস্থা এই সময় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে নানান ধরনের প্রকৃতিপাঠ শিবির এবং শৈলারোহণ প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে থাকেন। এ রকমই একটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী সংস্থা হল হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশন।

এই সংস্থাটির হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গের শুশুনিয়া পাহাড়ে ১৯৬৫ সালে প্রথম শুরু হয়েছিল শৈলারোহন প্রশিক্ষণ শিবির। আর আজও তার ধারাকে অব্যাহত রেখে এই সংস্থাটি তাদের ৫৯তম শৈলারোহণ প্রশিক্ষণ শিবির সম্পন্ন করে ফেলল। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পাহাড়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এই প্রশিক্ষণ শিবির।

কলকাতা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা এই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগদান করেছিল। এই প্রশিক্ষণ শিবিরের মুখ্য প্রশিক্ষক তথা হিমালয়ের বুকে একাধিক অভিযানে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট পর্বতারোহী সুশান্তকুমার মজুমদার জানালেন, “১৯৬৫ সালে বাঁকুড়া জেলার এই শুশুনিয়া পাহাড়টিকেই শৈলারোহণ প্রশিক্ষণ শিবিরের উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশন। তাদের উদ্যোগে প্রশিক্ষক নিমা তাসি, দ্যা নামগিয়াল, কে পি শর্মার তত্ত্বাবধানে যে শৈলারোহণ শিবির পথ চলা শুরু করেছিল আজ সেটা পায়ে পায়ে ৫৯তম বর্ষ অতিক্রম করল। এখানে বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েদের পাহাড়ে চড়ার প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি, অরণ্য এবং বন্যপ্রাণরক্ষা-সহ পরিবেশরক্ষার ক্ষেত্রে সামাজিক দায়িত্ববোধ পালনের ধারণা প্রদান করা হয় একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে।”

rock climbing 1 23.12

চলছে ক্লাস।

সুশান্তবাবু আরও জানালেন, এখানে শৈল আরোহণের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করার পর শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা এবং গুণগতমানের উপর ভিত্তি করে তারা পরবর্তী পর্যায়ে ইন্টারমিডিয়েট এবং অ্যাডভান্সড্‌ রক ক্লাইম্বিং কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারে।

হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশনের অপর কর্মকর্তা অলককুমার মুখোপাধ্যায় বললেন, “এখানে, এই শুশুনিয়া পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে এই শিবির আয়োজন করার ফলে এখানকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে একটা আত্মিক যোগ গড়ে উঠেছে এই সংস্থার। পশ্চিমবঙ্গ যুব কল্যাণ দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের এই সংস্থাও প্রতি বছরই কিছু শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ অবৈতনিক ভাবে এই শিবিরে যোগদানের সুযোগ দিয়ে থাকে। মূলত সমাজের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের প্রসারের পাশাপাশি পরিবেশরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতাকে বাড়িয়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”

শিক্ষার্থীদের কথায়, বিভিন্ন রকম প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে কী ভাবে নিজেকে স্থির রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে অতিক্রম করতে হয় এই শিক্ষাই এখান থেকে পাওয়া যায়। তা ছাড়া প্রশিক্ষকদের সহযোগিতায় দুরহ শৈলগাত্রগুলিকে কী ভাবে কৌশলগত শিক্ষালাভের ফলে অতিক্রম করা যায় তা-ও জানা যায় এখান থেকে। এর পাশাপাশি একসাথে থাকার ফলে তৈরি হয় উদার বন্ধুত্ব এবং পাওয়া যায় অপরিসীম আনন্দ আর অ্যাডভেঞ্চারের হাতছানি।

ছবি: প্রতিবেদক

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version