Home খেলাধুলো ক্রিকেট বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: অল্প পুঁজি নিয়ে লড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা, অষ্টমবার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: অল্প পুঁজি নিয়ে লড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা, অষ্টমবার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

0
জয়ী অস্ট্রেলিয়া। ছবি আইসিসি ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২১২ (৪৯.৪ ওভার) (ডেভিড মিলার ১০১, হাইনরিখ ক্লাসেন ৪৭, মিচেল স্টার্ক ৩-৩৪, প্যাট কামিন্স ৩-৫১) 

অস্ট্রেলিয়া: ২১৫-৭ (৪৭.২ ওভার) (ট্র্যাভিস হেড ৬২, স্টিভ স্মিথ ৩০, তাবরাইজ শামসি ২-৪২, গেরাল্ড কোয়েৎজি ২-৪৭)

কলকাতা: এই নিয়ে আটবার ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের ফাইনালে গেল অস্ট্রেলিয়া। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বল্প পুঁজির বিরুদ্ধে রীতিমতো লড়াই করে জিতল হল অস্ট্রেলিয়াকে। এবং এত কম স্কোরের ম্যাচেও সেঞ্চুরি এল দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলারের ব্যাট থেকে। দুর্ভাগ্য তাঁর, তাঁর সেঞ্চুরি দলকে জয়ের মুখ দেখাতে পারল না।

বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স-এ আয়োজিত দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ২১২ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোতে বেশ ঘাম ঝরাতে হল অস্ট্রেলিয়াকে। যেভাবে শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া, তাতে মনে হয়েছিল খুব সহজেই জয়ী হবে তারা। কিন্তু জয়ের রানে পৌঁছোতে তাঁদের ৪৭.২ ওভার লেগে গেল। আর হারাতে হল ৭টা উইকেট।

শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ফাইনালে মুখোমুখি হল ভারতের। ২০০৩-এর পর ২০২৩। কুড়ি বছর পর দুই দল মুখোমুখি হবে আগামী রবিবার অমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। ভারত পারবে কি ২০০৩-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ তুলতে?

১৫ বছরে প্রথম ১০ ওভারে সর্বনিম্ন রান দক্ষিণ আফ্রিকার

বৃহস্পতিবার ইডেনে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এ দিন আবহাওয়া খুব একটা ভালো ছিল না। বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। বৃষ্টির জন্য খেলা কিছুক্ষণ বন্ধও ছিল। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ব্যাট নেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ব্যাট না নিয়ে ফিল্ডিং নিলে ফল যে উলটো হত না, তা কে বলতে পারে।

শুরুতেই বিপর্যয় দক্ষিণ আফ্রিকার। তারা প্রথম ১০ ওভারে তুলল ২ উইকেটে ১৮ রান। গত ১৫ বছরে একদিনের ম্যাচে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। ২৪ রানের মধ্যে চলে গেল ৪ উইকেট। আর এই ২৪ রানে পৌঁছোতেই চলে গেল ১১.৫ ওভার। মিচেল স্টার্ক আর জোশ হ্যাজলউডের বল খেলতেই পারছিলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। দলের অধিনায়ক বাভুমা এবং আইডেন মার্করাম তাঁদের উইকেট তুলে দিলেন স্টার্ক-এর হাতে আর হ্যাজলউড পেলেন কুইন্টন ডি কক এবং রাসি ফান ডেয়ার ডুসেনের উইকেট।

মিলারের সেঞ্চুরি, ক্লাসেন ৫০ থেকে ৩ রান দূরে

২৪-৪। মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা বোধহয় আজ তিন অঙ্কের রানেই পৌঁছোতে পারবে না। এমনই তাদের হাল। কিন্তু এখানেই দলের হাল ধরলেন ডেভিড মিলার এবং হাইনরিখ ক্লাসেন। এঁরা দু’জনে এত স্বচ্ছন্দে ব্যাট করতে লাগলেন যে মনেই হচ্ছিল না, একটু আগে অস্ট্রেলীয় বোলারদের সামনে থরহরিকম্পমান হয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।

মিলার আর ক্লাসেন স্বচ্ছন্দে দলের স্কোর ১০০ পার করে দিলেন। মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপর কেটে গিয়েছে। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে ৯৫ রান যোগ করার পরে ক্লাসেন ট্র্যাভিস হেডের বলে বোল্ড হলেন। মাত্র ৩ রানের জন্য পঞ্চাশ-এ পৌঁছোতে পারলেন না তিনি। কিন্তু ৪৭ রান করলেন ৪৮ বলে। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে আউট হন ক্লাসেন। পরের বলেই আউট হন মার্কো ইয়ানসেন। আবার বিপদগ্রস্ত দক্ষিণ আফ্রিকা।

কিন্তু সপ্তম উইকেটে গেরাল্ড কোয়েৎজিকে সঙ্গে নিয়ে মিলার যোগ করেন ৫৩ রান। কোয়েৎজি দলের ১৭২ রানের মাথায় প্যাট কামিন্সের বলে জোশ ইংলিসকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। এর পর মিলার অন্য সহযোগীদের নিয়ে দলকে পৌঁছে দেন ২০৩ রানে। ইতিমধ্যে তিনি সেঞ্চুরিও করে ফেলেন। ১১৬ বলে ১০১ রান করে কামিন্সের বলে হেডকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান এ দিনের অন্যতম নায়ক ডেভিড মিলার। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ করল ২১২ রানে। তাদের ইনিংসে আর মাত্র ২টি বল বাকি ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার ৬০-০ থেকে ১৩৭-৫

জয়ের জন্য প্রয়োজন ২১৩ রান। অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাটাররা এমনভাবে ব্যাট শুরু করলেন যেন খুব সহজেই তাঁরা এই জয় করায়ত্ত করে নেবেন। ট্র্যাভিস হেড আর ডেভিড ওয়ার্নার প্রথম উইকেটের জুটিতে মাত্র ৬.১ ওভারে পৌঁছে গেলেন ৬০ রানে। গড়ে ওভারপ্রতি ১০টা করে রান। তখনই অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা সহজ জয় সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে আছেন।

কিন্তু সেই ৬০-০ থেকে একসময়ে দলের স্কোর পৌঁছোল ১৩৭-৫-এ। প্রথম ৬০ রান এল ৬.১ ওভারে আর পরের ৭৭ রান এল ১৭.৩ ওভারে। একে একে ফিরে গিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ, ট্র্যাভিস হেড, মার্নাস লাবুশানে এবং সর্বোপরি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে নিয়েছেন কেশব মহারাজ, আইডেন মার্করাম, কাগিসো রাবাদা আর তাবরাইজ শামসি। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সবচেয়ে বড়ো স্বস্তি ম্যাক্সওয়েলের আউট। আফগানিস্তান ম্যাচের ত্রাস ম্যাক্সওয়েল মাত্র ১ রান করে শামসির বলে বোল্ড।

‘প্লেয়ার অভ দ্য ম্যাচ’ ট্র্যাভিস হেড

আশায় বুক বাঁধছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকরা। ভাবছেন, এত স্বল্প রানের পুঁজি নিয়েও লড়াই করা যায়? জয়ের স্বপ্ন দেখা যায়? এই সময়ে ম্যাচের মোড় ঘোরালেন স্টিভ স্মিথ, জোশ ইংলিস এবং মিচেল স্টার্ক। ষষ্ঠ উইকেটে স্মিথ-ইংলিস যোগ করল ৩৭ রান এবং সপ্তম উইকেটে ইংলিস-স্টার্ক জুটি যোগ করল ১৯ রান। এত কম স্কোরের ম্যাচে এগুলোও যথেষ্ট কার্যকর রান। শেষ পর্যন্ত ১৬ বল বাকি থাকতে অস্ট্রেলিয়া জয়ের রানে পৌঁছে গেল। ৭ উইকেটে ২১৫ রান করে তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল ৩ উইকেটে। ৪৮ বলে ৬২ রান এবং ২১ রানে ২ উইকেট ঝুলিতে ভরে এ দিন ‘প্লেয়ার অভ দ্য ম্যাচ’ হলেন ট্র্যাভিস হেড।

আরও পড়ুন

একদিনের ম্যাচের বিশ্বকাপে সবচেয়ে দ্রুত ৫০ উইকেট পাওয়ার রেকর্ড গড়লেন মোহম্মদ শামী  

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version