প্রয়াত হলেন ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার সেলিম দুরানি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। জামনগরে নিজের বাড়িতেই তিনি মারা গিয়েছেন বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। দেশের হয়ে একাধিক ঐতিহাসিক জয়ের নায়কের প্রয়াণে ভারতীয় ক্রিকেটের একটি যুগের অবসান হল।
বহুদিন ধরেই ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন সেলিম দুরানি। গুজরাতের জামনগরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। এর আগে জানুয়ারিতে তাঁর উরুর হাড় ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তখন তাঁর অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছিল।
১৯৬০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মুম্বই টেস্টে সেলিম দুরানির অভিষেক হয়েছিল। জাতীয় দলের হয়ে প্রায় ১৪ বছর প্রতিনিধিত্ব করেন। ছয় এবং সাতের দশকে সেলিম দুরানি ক্রিকেট জগতে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তিনি নিজের অলরাউন্ড পারফরমেন্সের দৌলতে একটা আলাদা পরিচিতি তৈরি করেন। ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে দুরানি একজন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার হিসেবেই নাম লিখিয়েছেন। ছয়ের দশকের গোড়াতেই প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পেয়েছিলেন অর্জুন সম্মান।
১৯৬১-৬২ সালে কলকাতা ও চেন্নাইয়ে (তখন মাদ্রাজ) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের বিখ্যাত জয়ের কারিগর ছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন যথাক্রমে ৮ ও ১০ উইকেট। একদশক পরে পোর্ট অফ স্পেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়েরও অন্যতম কারিগর সেই দুরানিই। আউট করেছিলেন ক্লাইভ লয়েড ও গ্যারি সোবার্সকে।
২৯টি টেস্ট খেলা দুরানির ব্যাটিং গড় ছিল ২৫-এর সামান্য বেশি। এক সেঞ্চুরি-সহ ১২০২ রান আর ৭৫ উইকেটের পরিসংখ্যানে তাই তাঁকে মাপা শুধু কঠিনই নয়, আদতে অসম্ভবই। ক্রিকেট-চেতনায় প্রভাব ফেলার ব্যাপারটাই যে পরিসংখ্যানে অনুপস্থিত! বাঁহাতি অর্থোডক্স স্পিন বোলিংয়ের পাশাপাশি ছক্কা মারার জন্যও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি। কেরিয়ারের একমাত্র শতরান শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। কপিলে দেবের আগমনের আগে পর্যন্ত সময়ে দুরানিই যে শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার ছিলেন, এবিষয়ে অনেকেই একমত।
দুরানিই একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার, যাঁর জন্ম আফগানিস্তানে। ১৯৩৪ সালের ১১ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের কাবুলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেলিম দুরানি। মাত্র ৮ মাস বয়সেই তাঁর পরিবার পাকিস্তানের করাচিতে এসে বসবাস করতে শুরু করে। এরপর যখন ভারত এবং পাকিস্তান ভাগ হয়ে যায়, সেইসময় তিনি ভারতে চলে এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: এ বার পোস্ট অফিসের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পেও প্যান, আধার বাধ্যতামূলক, বিজ্ঞপ্তি অর্থমন্ত্রকের