ভারত: ১৭৪-৯ (রিঙ্কু সিং ৪৬, যশস্বী জয়সোয়াল ৩৭, বেন ডোয়ারসুইশ ৩-৪০, তনবীর সংঘ ২-৩০)
অস্ট্রেলিয়া: ১৫৪-৭ (ম্যাথু ওয়েড ৩৬, ট্র্যাভিস হেড ৩১, অক্ষর পটেল ৩-১৬, দীপক চহর ২-৪৪)
রায়পুর: আগের ৩টি ম্যাচের মতো এই ম্যাচে রানের ঝড় উঠল না। ভারতকে ১৭৪ রানেই আটকে দিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু নিজেরা সেই রানের কাছাকাছিও পৌঁছোতে পারল না। ফলে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারিয়ে সিরিজ দখল করল ভারত। আপাতত তারা এগিয়ে রইল ৩-১ ফলে। সিরিজের পঞ্চম তথা শেষ ম্যাচ হবে বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে, ৩ ডিসেম্বর রবিবার।
শুক্রবার রায়পুরের শহিদ বীর নারায়ণ সিং ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া টসে জিতে ব্যাট করতে পাঠায় ভারতকে। অস্ট্রেলিয়ার এই সিদ্ধান্তই কাল হল। ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে করে ৯ উইকেটে ১৭৪ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়া ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৪-এর বেশি করতে পারল না। ফলে হেরে গেল ২০ রানে।
ভারতের এই জয়ের পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে অক্ষর পটেল এবং রিঙ্কু সিং-এর। ১৬ রানে ৩ উইকেট দখল করে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন অক্ষর পটেল। আর এ বারের টি২০ সিরিজে প্রায় প্রতিটি ম্যাচে রিঙ্কু কিছু না কিছু অবদান রেখে যাচ্ছেন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে শেষ বলে রান করে ম্যাচ জিতিয়ে ছিলেন রিঙ্কু। আর দ্বিতীয় ম্যাচে রিঙ্কু মাত্র ৯ বলে নট আউট থেকে ৩১ রান না করলে ভারত ম্যাচ জিতত কি না সন্দেহ।
রিঙ্কু, যশস্বী, জিতেশ আর ঋতুরাজের ব্যাটে রান
এ দিন ভারত শুরুটা ভালোই করেছিল। যশস্বী জয়সোয়াল আর ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের জুটি ৬ ওভারে করে ৫০ রান। কিন্তু ২৮ বলে ৩৭ রান করে আরোন হার্ডির বলে বেন ম্যাকডারমটকে ক্যাচ দিয়ে যশস্বী আউট হতেই ভারতের আরও ২টি উইকেট বেশ তাড়াতাড়ি চলে যায়। ৩ উইকেটে ৬৩ হতে ঋতুরাজের সঙ্গে দলের হাল ধরেন রিঙ্কু। তাঁরা দু’জনে দলকে পৌঁছে দেন ১১১ রানে।
দলের ১১১ রানে ঋতুরাজ আউট হন তনবীর সংঘের বলে বেন ডোয়ারসুইশকে ক্যাচ দিয়ে। ঋতুরাজ করেন ২৮ বলে ৩২ রান। এর পর রিঙ্কুর সঙ্গী হন জিতেশ কুমার। তাঁরা দু’জনে পঞ্চম উইকেটে যোগ করেন ৫৬ রান। দলের ১৬৭ রানের মাথায় জিতেশ আউট হন ডোয়ারসুইশের বলে ট্র্যাভিস হেডকে ক্যাচ দিয়ে। জিতেশ করেন ১৯ বলে ৩৫ রান। ভারতের ইনিংসের বাকি ছিল ৮ বল। সেই ৮ বলে মাত্র ৭ রান যোগ করে প্যাভিলিয়নে একে একে ফিরে যান অক্ষর পটেল (১ বলে কোনো রান না করে), রিঙ্কু সিং (২৯ বলে ৪৬ রান), দীপক চহর (২ বলে কোনো রান না করে) এবং রবি বিশনয় (৩ বলে ৪ রান করে)।
গোড়ায় ঝড় তুলে শেষে ঝিমিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৭৫ রান তাড়া করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া গোড়াতেই ঝড় তোলে। তারা যে ভাবে শুরু করে তাতে মনে হচ্ছিল খুব সহজেই তারা জয় করায়ত্ত করবে। মাত্র ৩.১ ওভারে ট্র্যাভিস হেড আর জোশ ফিলিপ ৪০ রান তোলে। কিন্তু দলের ৪০ রানের মাথায় অক্ষর পটেলের বলে মুকেশ কুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে হেড (১৬ বলে ৩১ রান) বিদায় নিতেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে অস্ট্রেলিয়ার।
১৩৩ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন দলের অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। কিন্তু তাঁর এই লড়াইয়ে তেমন ভাবে কারও সঙ্গ পাননি। সপ্তম উইকেট পড়ার পর অস্ট্রেলিয়ার হাতে ছিল ১৫ বল। কিন্তু সেই ১৫ বলে ক্রিস গ্রিনকে নিয়ে ওয়েড যোগ করেন ২১ রান। টি২০ ম্যাচের তুলনায় রান ওঠার গতি খুবই কম ছিল। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার দৌড় ৭ উইকেটে ১৫৪ রানে শেষ হয়ে যায়।
এ দিন ব্যাটে কিছু করতে না পারলেও বলে খেল দেখালেন অক্ষর। মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট দখল করেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দেন দীপক চহর (৪৪ রানে ২ উইকেট), রবি বিশনয় (১৭ রানে ১ উইকেট) এবং অবেশ খান (৩৩ রানে ১ উইকেট)।
আরও পড়ুন
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতীয় দল: টেস্টে রোহিত, একদিনের ম্যাচে রাহুল, টি২০-তে সূর্যকুমার অধিনায়ক