বাংলাদেশ: ২৩৩ ও ১৪৬ (শাদমান ইসলাম ৫০, মুসফিকুর রহিম ৩৭, জসপ্রীত বুমরাহ ৩-১৭, রবীন্দ্র জাদেজা ৩-৩৪, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৩-৫০)
ভারত: ২৮৫-৯ (ডিক্লেয়ার্ড) ও ৯৮-৩ (যশস্বী জয়সোয়াল ৫১, বিরাট কোহলি ২৯ নট আউট, মেহিদি হাসান মিরাজ ২-৪৪)
কানপুর: টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অবিশ্বাস্য জয় পেল ভারত। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ কার্যত দুদিন খেলা হল। প্রথম দিন খেলা হয়েছিল ৩৫ ওভার। দ্বিতীয় আর তৃতীয় দিন বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল খেলা। চতুর্থ দিনে পুরো খেলা হওয়ার পর মঙ্গলবার পঞ্চম দিনে খেলা হল ৫৩.২ ওভার। এই দুদিনের খেলাতেই বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিজ জিতে নিল রোহিত বাহিনী। আবহাওয়াকে তোয়াক্কা না করে এবং ঘড়িকে পিছনে ফেলে জয় করায়ত্ত করল ভারত।
কানপুরের গ্রিন পার্কের মাঠে ২ উইকেটে ২৬ রান হাতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশে। ১১ ওভার খেলা হয়ে গিয়েছিল। এদিন আর ৩৬ ওভার খেলে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে। জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ৯৫ রান। রোহিত বাহিনী সময় নিল এক ঘণ্টার কিছু বেশি। ১৭.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান তুলে দু’ টেস্টের সিরিজ দখল করে নিল ভারত।
অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে ভারতের জয়ের অন্যতম দুই নায়ক রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জসপ্রীত বুমরাহ। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
সবচেয়ে কম বল ব্যাট করে জয়ের খতিয়ান
ক্রিকেটে কত রকম রেকর্ড হয়, ভাবা যায় না। কত কম বল ব্যাট করে টেস্ট জিতে নেওয়া যায়, সেটাও একটা রেকর্ড। এ ব্যাপারে বিশ্বরেকর্ডটি রয়েছে ইংল্যান্ডের দখলে। ১৯৩৫-এ ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাত্র ২৭৬ বল অর্থাৎ ৪৬ ওভার ব্যাট করে জয় কেড়ে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। এ ব্যাপারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। তাদের রেকর্ডটি এই ২০২৪-এরই। কেপটাউনে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারত জয় পেয়ে গিয়েছিল মাত্র ২৮১ বল অর্থাৎ ৪৬.৫ ওভার ব্যাট করে। আর মঙ্গলবার কানপুরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত জয় পেল ৩১২ বল অর্থাৎ ৫২ ওভার ব্যাট করে। সবচেয়ে কম বল ব্যাট করে জেতার ক্ষেত্রে ভারতের আজকের জয় রয়েছে চতুর্থ স্থানে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাউথ আফ্রিকা। ২০০৫-এ কেপটাউনে জিম্বাবোয়েকে তারা হারিয়েছিল ৩০০ বল অর্থাৎ ৫০ ওভার ব্যাট করে।
রান পেলেন শাদমান, নাজমুল
এদিন ভারতের বোলারদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে পেরেছিলেন চতুর্থ উইকেটের জুটিতে (৪৫ রান) শাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত এবং অষ্টম উইকেটের জুটিতে (২৪ রান) মুসফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের মাত্র ৪ জন ব্যাটার দু’ অঙ্কের রানে পৌঁছোন। এঁদের মধ্যে অন্যতম ওপেনার শাদমান ইসলাম করেন অর্ধশত রান এবং মুসফিকুর করেন ৩৭ রান। ভারতের তিনজন বোলার ৩টি করে উইকেটে দখল করেন। এঁরা হলেন জসপ্রীত বুমরাহ (৩-১৭), রবীন্দ্র জাদেজা (৩-৩৪) এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৩-৫০)। এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে সফলতম ব্যাটার শাদমানের উইকেট পান আকাশ দীপ।
অধিনায়ক রোহিত শর্মার হাতে ট্রফি তুলে দিলেন রাজীব শুক্ল। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
দুই ইনিংসেই যশস্বীর অর্ধশত রান
জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ৯৫ রান তাড়া করতে গিয়ে ভারত ১৭.২ ওভারে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যায়। প্রথম ইনিংসের মতোই দ্বিতীয় ইনিংসেও যশস্বী জয়সোয়াল অর্ধশত রান করেন। রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল ৩৪ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর যশস্বী এবং বিরাট কোহলি দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। দলের ৯২ রানের মাথায় তাইজুল ইসলামের বলে শাকিবকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন যশস্বী (৫১ রান)। এর পর প্রয়োজনীয় কাজটি সেরে ফেলেন কোহলি ও ঋষভ পন্থ। ভারত ৭ উইকেটে হারাল বাংলাদেশকে।
দ্বিতীয় টেস্টে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন যশস্বী জয়সোয়াল। আর ব্যাটে ও বলে সমান দক্ষতা দেখিয়ে ‘প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ’ হন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।