নিউজিল্যান্ড: ৩২০-৫ (টম ল্যাথাম ১১৮ নট আউট, উইল ইয়ং ১০৭, নাসীম শাহ ২-৬৩, হ্যারিস রাউফ ২-৮৩)
পাকিস্তান: ২৬০ (৪৭.২ ওভার) (খুশদিল শাহ ৬৯, বাবর আজম ৬৪, উইল ও’রুর্ক ৩-৪৭, মিচেল স্যান্টনার ৩-৬৬)
করাচি: একটা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টকে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রায় তিন দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে পাকিস্তানকে। শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন বাস্তব হল। নিজেদের দেশে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন করে কিছু একটা করে দেখানোর আশায় রয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু লড়াইটা কঠিন হয়ে গেল তাদের কাছে। যেখানে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে যাওয়া গ্রুপের তিনটে ম্যাচের ফলের উপর নির্ভরশীল, সেখানে প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়াটা এগিয়ে যাওয়ার পথে একটা বড় ধাক্কা।
দুর্ভাগ্য পাকিস্তানের। খেলা মাত্র দু’ বল গড়িয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের ওপেনার উইল ইয়ং-এর কভার ড্রাইভ আটকাতে গিয়ে ভালো রকম আহত হলেন ফকর জমান। ফলে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের বেশিটাই ফিল্ডিং করতে পারলেন না। আর নিজের সহজাত মারকুটে ব্যাটিং-ও দেখাতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে কিউয়িদের কাছে ৬০ রানে হারতে হল। প্রথমে ব্যাট করে টম ল্যাথাম (১০৪ বলে ১১৮ নট আউট) এবং উইল ইয়ং-এর (১১৭ বলে ১০৪ রান) সেঞ্চুরিতে ভর করে নিউজিল্যান্ড পৌঁছে গেল ৫ উইকেটে ৩২০ রানে। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে পাকিস্তান ২.৪ ওভার বাকি থাকতেই ২৬০ রানে গুটিয়ে গেল। ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন টম ল্যাথাম।
শেষ দিকে ঝড় তুললেন ফিলিপ্স-ল্যাথাম
বুধবার করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠায় পাকিস্তান। ১৬ ওভারের মধ্যে ৩টি উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়ে কিউয়িরা। একে একে ফিরে যান অন্যতম ওপেনার ডেভন কনওয়ে (১৭ বলে ১০ রান), কেন উইলিয়ামসন (২ বলে ১ রান) এবং ড্যারিল মিচেল (২৪ বলে ১০ রান)। এক প্রান্তে দ্রুত উইকেট পড়তে দেখেও ঠান্ডা মাথায় নিজের খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন আর এক ওপেনার উইল ইয়ং। দলের ৭৩ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ার পর ইয়ং সঙ্গী হিসাবে পান টম ল্যাথামকে। এখান থেকেই ঘুরে যায় খেলার মোড়।

জয়ের পরে নিউজিল্যান্ডের উচ্ছ্বাস। ছবি BLACKCAPS ‘X’ থেকে নেওয়া।
ইয়ং-ল্যাথাম জুটি চতুর্থ উইকেটে যোগ করে ২১ ওভারে ১১৮ রান। নাসীম শাহের বলে পরিবর্ত খেলোয়াড় ফাহীম আশরফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ইয়ং যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তখন কিউয়িদের স্কোরবোর্ডে ১৯১ রান। ইতিমধ্যে সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন ইয়ং। ল্যাথামের সঙ্গী হলেন গ্লেন ফিলিপ্স। কিউয়িদের হাতে তখন ১২.৪ ওভার। ঝড়ের গতিতে রান তুলতে লাগলেন ল্যাথাম ও ফিলিপ্স। ১২.২ ওভারে তাঁরা তুললেন ১২৫ রান। ৩৯ বলে ৬১ রান করে হ্যারিস রাউফের বলে সেই ফকর জমানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন ফিলিপ্স। শেষ পর্যন্ত কিউয়িরা পৌঁছল ৩২০ রানে।
আত্মসমর্পণ পাকিস্তানের
লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছোনোর তাগাদা কতটা ছিল পাকিস্তানের বলা কঠিন। প্রথম ১০ ওভারে তারা তোলে মাত্র ২২ রান। এবং ততক্ষণে দুটি উইকেটও পড়ে গিয়েছে। নামলেন ফকর জমান। বাবর আজমকে নিয়ে উইকেট পতন কিছুটা ঠেকানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই প্রত্যাশামতো খেলাটি খেলতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত দলের ৬৯ রানের মাথায় তিনি ফিরে গেলেন মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে বোল্ড হয়ে। রানের গতি ততক্ষণে কিছুটা বেড়েছিল। কিন্তু লড়াই চালানোর পক্ষে তা যথেষ্ট নয়।
নিয়মিত ব্যাবধানেই উইকেট পড়তে থাকে পাকিস্তানের। বাবর আজম (৯০ বলে ৬৪ রান), খুশদিল শাহ (৪৯ বলে ৬৯ রান) এবং সলমন আগা (২৮ বলে ৪২ রান) কিছুটা লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা জয়ের পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৪ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তান অল আউট হয়ে যায় ২৬০ রানে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ ‘এ’-র ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৬০ রানে হারাল পাকিস্তানকে।