শ্রীলঙ্কা: ২৫৭-৯ (সমরভিকরামা ৯৩, কুশল ৫০, হাসান মাহমুদ ৩-৫৭, তাসকিন আহমেদ ৩-৬২)
বাংলাদেশ: ২৩৬ (৪৮.১ ওভার) (হৃদয় ৮২, মুসফিকুর ২৯, দাসুন শনাকা ৩-২৮, মতিশা পতিরানা ৩- ৫৮)
কলম্বো: গ্রুপ স্টেজে হারের বদলা নিতে পারল না বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের ‘সুপার ৪’-এও তারা হার স্বীকার করল শ্রীলঙ্কার কাছে। শনিবার কলম্বোর আর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ২১ রানে বাংলাদেশকে হারাল। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র জ্বলে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন তৌহিদ হৃদয়। কিন্তু আর কাউকে সঙ্গী পেলেন না।
গোটা সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও বৃষ্টি কোনো বাধা সৃষ্টি করল না এ দিনের ম্যাচে। টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৭ রান করে তারা। সদিরা সমরভিকরামা মাত্র ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন। শ্রীলঙ্কার হয়ে অর্ধশত রান করেন কুশল মেন্ডিস।
লড়াই দিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ
২৫৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে মহম্মদ নাইম ও মেহিদি হাসান মির্জা শুরুটা মন্দ করেননি। ওপেনিং জুটিতে অর্ধশত রান হয়। বাংলাদেশের প্রথম উইকেট পড়ে ৫৫ রানে। দাসুন শনাকার বলে পরিবর্ত খেলোয়াড়কে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ২৮ রানে প্যাভিলিয়নের পথে পা বাড়ান মির্জা। মির্জা চলে যেতেই ছন্দ কাটে নাইমের খেলায়। দলের স্কোরে মাত্র ৫ রান যোগ হওয়ার পরেই নাইম ব্যক্তিগত ২১ রানের মাথায় শনাকার বলে কুশল মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
এর পর অতি দ্রুত পড়ে যায় আরও ২টি উইকেট। দলের ৭০ রানে আউট হন শাকিব আল হাসান। পতিরানার বলে মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। শাকিব করেন মাত্র ৩ রান। এর পরে দলের স্কোরে মাত্র ১৩ রান যোগ হতেই আউট হন লিটন দাস। মাত্র ১৩ রান করে লিটন আউট হন দুনিত ওয়েলালেগের বলে মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে।
এর পর দলের পতন কিছুটা ঠেকানোর চেষ্টা করেন মুসফিকুর রহিম ও তৌহিদ হৃদয়। তাঁরা পঞ্চম উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ৭২ রান। কিন্তু দলের ১৫৫ রানে মুসফিকুর আউট হতেই নিয়মিত ব্যবধানে বাংলাদেশের উইকেট পড়তে থাকে। হৃদয় কিছুটা চেষ্টা করলেও সঙ্গী হিসাবে কাউকে পাননি। শেষ পর্যন্ত দলের স্কোরে ৮১ রান যোগ হওয়ার পর বাংলাদেশ ২৩৬ রানে অল আউট হয়ে যায়।
সেঞ্চুরি পেলেন না সমরভিকরামা
এ দিন শ্রীলঙ্কার হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন পাথুম নিঃশঙ্ক এবং দিমুত করুণারত্নে। ৩৪ রানে শ্রীলঙ্কা করুণারত্নেকে হারালেও দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে যোগ হয় ৭৪ রান। হাসান মাহমুদের বলে মুসফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে করুণারত্নে আউট হলে পাথুমের সঙ্গী হন কুশল মেন্ডিস। পাথুম-কুশল জুটি দলের রান ১০৮-এ নিয়ে গেলেও রান ওঠার গতি বেশ কমে যায়। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে ৭৪ রান আসে ১৭.৫ ওভারে। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ৫-এরও কম ওঠে রান।
১০৮ রানের মাথায় আউট হন পাথুম। ৪০ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হন। এর মধ্যে কুশল নিজস্ব অর্ধশত পূর্ণ করেন। কিন্তু ৫০ রানেই আউট হন তিনি শরিফুলের বলে তাসকিনকে ক্যাচ দিয়ে।
পাথুম আউট হওয়ার পরে কুশলের সঙ্গী হয়েছিলেন সমরভিকরামা। তিনি একটা দিক আটকে রাখলেও নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে শ্রীলঙ্কার। চতুর্থ উইকেট পড়ে ১৪৪ রানে। চরিত অসালঙ্কা ১০ রান করে তাসকিনের বলে শাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে মাত্র ২০ রান যোগ হয়। দলের ১৬৪ রানে আউট হন ধনঞ্জয় ডি সিলভা। ৬ রান করে হাসান মাহমুদের বলে মুসফিকুরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ডি সিলভা।
সমরভিকরামার সঙ্গে যোগ দেন উইকেটকিপার দাসুন শনাকা। দু’জনে উইকেট পতন কিছুটা রোধ করেন। ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে যোগ হয় ৬০ রান। দলের ২২৪ রানে আউট হন দাসুন। ২৪ রান করে মাহমুদের বলে বোল্ড হন। শ্রীলঙ্কার শেষ ৪ উইকেটে যোগ হয় মাত্র ৩৩ রান। সব শেষে আউট হন সমরভিকরামা। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৭ রান দূরে থেকে যান তিনি। তাঁকে তুলে নেন তাসকিন।
বাংলাদেশের জন্য জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫৮ রান। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার ২২ রান আগেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়ে যায়।