Home খেলাধুলো ফুটবল ডুরান্ড কাপ ২০২৫: আধিপত্যে ফের ডার্বি দখল ইস্টবেঙ্গলের, ব্রুজোর ছকেই হার মানল...

ডুরান্ড কাপ ২০২৫: আধিপত্যে ফের ডার্বি দখল ইস্টবেঙ্গলের, ব্রুজোর ছকেই হার মানল মোলিনার মোহনবাগান

মোহনবাগন: ১ (অনিরুদ্ধ থাপা) ইস্টবেঙ্গল: ২ (দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস)

দেড় বছর পর বড় ডার্বিতে লাল-হলুদ সমর্থকের মুখে ফের হাসি। রবিবার যুবভারতীতে ২-১ গোলে মোহনবাগানকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ইস্টবেঙ্গল। গোলদাতা দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস নিঃসন্দেহে ম্যাচের নায়ক, কিন্তু এই জয়ের আসল কৃতিত্ব লুকিয়ে ব্রুজোর কৌশলে। অন্যদিকে, বারবার সিদ্ধান্তে ভুল করে নিজের দলকে চাপে ফেলে দেন বাগান কোচ হোসে মোলিনা।

ব্রুজোর ছক: মাঝমাঠে দখল, রক্ষণে শৃঙ্খলা

ডার্বির আগে সাংবাদিক বৈঠকে ব্রুজো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— “গত বারের থেকেও ভালো খেলবে ইস্টবেঙ্গল।” রবিবার সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হলো। মাঠে নেমেই ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। মহেশ নাওরেম সিংহ, মিগুয়েল ফিগুয়েরা ও সাউল ক্রেসপো ছোট ছোট পাসে খেলে মোহনবাগানের ছন্দ কেটে দেন। এর সঙ্গে প্রান্ত ধরে বিপিন সিং ও এডমুন্ড লালরিন্ডিকার দ্রুততা বাগানের রক্ষণকে চাপে রাখে।

রক্ষণেও বদল এনেছেন ব্রুজো। আনোয়ার আলির সঙ্গে কেভিন সিবিলের যুগলবন্দি পুরো ম্যাচে বাগান আক্রমণকে বোতলবন্দি করে রাখে। লিস্টন কোলাসোর জন্য ডাবল মার্কিং কাজ করে যায় বারবার।

মোলিনার ভুল: ছন্দহীন মাঝমাঠ, ভ্রান্ত পরিবর্তন

মোহনবাগানের সমস্যার শুরু মাঝমাঠ থেকেই। আপুইয়া, অনিরুদ্ধ থাপা ও সাহালের মধ্যে সমন্বয় তৈরি হয়নি। একে অপরের থেকে অনেক দূরে খেলায় বল দখল ও আক্রমণ গড়ে তুলতে পারেননি তারা। ব্রুজোর প্রেসিং-গেমে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে বাগান।

পরিবর্তন আনতে গিয়ে মোলিনা আরও ভুল করেন। প্রথমার্ধেই আক্রমণধর্মী ফুটবলার নামানো প্রয়োজন ছিল, কিন্তু দেরি করে ফেলেন। জেসন কামিংস ও পরে পেত্রাতোসকে নামালেও ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারেননি তারা।

Oscar Bruzon
এই জয়ের আসল কৃতিত্ব লুকিয়ে ব্রুজোর কৌশলে।

ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট

১৫ মিনিটে চোটে মাঠ ছাড়েন ইস্টবেঙ্গলের স্ট্রাইকার হামিদ আহদাদ। কিন্তু ব্রুজ়োর আস্থা তখন দিয়ামানতাকোসে। সেটাই হয়ে দাঁড়ায় ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। ৩৫ মিনিটে আশিস রাইয়ের ফাউলে বিপিন সিং বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। ঠান্ডা মাথায় গোল করে দলকে এগিয়ে দেন দিয়ামানতাকোস।

দ্বিতীয়ার্ধে আবারও নায়ক তিনি। ৫২ মিনিটে আলবের্তো রদ্রিগেজের ক্রস থেকে অসাধারণ ফিনিশে ব্যবধান বাড়ান। যদিও ৬৮ মিনিটে অনিরুদ্ধ থাপার দূরপাল্লার শটে ব্যবধান কমায় বাগান, তবুও শেষ পর্যন্ত লাল-হলুদের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি তারা।

মানসিক চাপের লড়াই

শেষ ২০ মিনিটে একের পর এক আক্রমণে ওঠে মোহনবাগান। লিস্টনের শট পোস্টে বাধা পায়, গোললাইন সেভ করেন সিবিলে। তবুও ছন্দ ফেরাতে পারেনি সবুজ-মেরুন। চাপ সামলাতে গিয়ে মাথা গরম হয় দুই দলের ফুটবলারের। কিন্তু ম্যাচ ম্যানেজমেন্টে এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। ঠান্ডা মাথায় খেলে পরিকল্পিতভাবে লিড ধরে রাখে তারা।

বহুদিন পর বড় ম্যাচে দাপট দেখাল ইস্টবেঙ্গল

জয়ের গুরুত্ব

এই জয় শুধু একটি ডার্বি জয় নয়, আত্মবিশ্বাস ফেরানোরও গল্প। বহু দিন পর বড় ম্যাচে দাপট দেখাল ইস্টবেঙ্গল। ব্রুজোর ট্যাকটিক্সে বদলে যাওয়া এই দল এখন কেবল প্রতিপক্ষ নয়, ট্রফির অন্যতম দাবিদার।

এবার সেমিফাইনালে লাল-হলুদের প্রতিপক্ষ বাংলারই দল ডায়মন্ড হারবার এফসি। সেখানেও নজর থাকবে— ব্রুজ়োর ছক এবং দিয়ামানতাকোসের গোলের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে কি না।

ছবি: সঞ্জয় হাজরা

আরও পড়ুন:

ডুরান্ড কাপ ২০২৫: ছিটকে গেল জামশেদপুর, সেমিফাইনালে চলে গেল ডায়মন্ড হারবার

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version