Home খেলাধুলো ফুটবল ডুরান্ড কাপ ২০২৪: দু’ গোলে পিছিয়ে থেকে ড্র, তারপর ফের বিশাল-হাতেই ডুরান্ড...

ডুরান্ড কাপ ২০২৪: দু’ গোলে পিছিয়ে থেকে ড্র, তারপর ফের বিশাল-হাতেই ডুরান্ড ফাইনালে মোহনবাগান  

0
এ দিনও ম্যাচের নায়ক বিশাল কাইথ। ছবি: সঞ্জয় হাজরা

মোহনবাগান এসজি: ২ (দিমিত্রি পেত্রাতোস, অনিরুধ থাপা)

বেঙ্গালুরু এফসি: ২ (সুনীল ছেত্রী, বিনিত বেঙ্কটেশ)

(টাইব্রেকারে বেঙ্গালুরুকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে জয়ী মোহনবাগান

কলকাতা: ম্যাচের ৬৮ মিনিট পর্যন্ত দু’ গোলে পিছিয়ে ছিল মোহনবাগান। কিন্তু হাল ছাড়েনি তারা। নির্ধারিত সময়ে ২-২ ড্র করে মোহনবাগান ম্যাচ নিয়ে গেল টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে আবার নায়ক বিশাল কাইথ। দুটি গোল বাঁচালেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালের মতো সেমিফাইনালেও বিশালের হাত জিতিয়ে দিল মোহনবাগানকে।

মঙ্গলবার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারাল বেঙ্গালুরু এফসিকে। ফাইনালে মোহনবাগান মুখোমুখি হবে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের। খেলা হবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনেই আগামী শনিবার ৩১ আগস্ট।  

প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে বেঙ্গালুরু

প্রথমার্ধে যে খেলা খেলল মোহনবাগান তাতে সমর্থকরা রীতিমতো হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। এ দিন প্রথম একাদশে ছ’টি বদল করেছিলেন কোচ খোসে মলিনা। তবে জেসন কামিংস ও দিমিত্রি পেত্রাতোস গোড়া থেকেই খেলেছেন। কিন্তু মোহনবাগান প্রথমার্ধে তার কোনো ফায়দা তুলতে পারেনি।

প্রথমার্ধের ২৭ মিনিটে মাথায় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন শুভাশিস বসু। ফলে দলের রক্ষণভাগ কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। সেই সুযোগে বেঙ্গালুরু আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করে এবং মোহনবাগানের গোলের সামনে কয়েকবার পৌঁছেও যায়। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই ম্যাচের ৪৩ মিনিটে এগিয়ে যায় বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরুকে এগিয়ে দেন সেই সুনীল ছেত্রীই। কয়েক মাস আগে যে মাঠে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন, সেই মাঠেই আবার গোল করলেন। বেঙ্গালুরুর বিনিথকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন মনবীর সিংহ। পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোনো ভুল করেননি সুনীল।

গোল খেয়ে কিছুটা তেড়েফুঁড়ে ওঠে মোহনবাগান। প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটে কোলাসোর শট বারে লেগে ফিরে আসে। তারপর পেত্রাতোসের কর্নার থেকে কামিংস-এর বাঁ পায়ের ভলি গোলপোস্টের কিছুটা দূর দিয়ে চলে যায়। এরপর প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে অনিরুধ থাপার ক্রস থেকে হেড করেন আলবের্তো রদরিগুয়েজ। বল পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। বেঙ্গালুরু প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে।

MB wins 27.08

মোহনবাগানের দিমিত্রি পেত্রাতোসকে ঠেকানোর চেষ্টা। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৩ গোল

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার মিনিটপাঁচেকের মধ্যে আবার গোল পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু। টম অলড্রডের একটি ব্যাক পাস বার করতে গিয়ে মিস করেন গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। বল পেয়ে যান বেঙ্গালুরুর বিনিত বেঙ্কটেশ। ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে কোনো ভুল করেননি তিনি। বেঙ্গালুরু এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে সবুজ-মেরুন বাহিনী। ৬০ মিনিটে তারা গোল করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুল করে বসেন বেঙ্গালুরুর গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। ফাঁকা গোলে হেড করতে যান গ্রেগ স্টুয়ার্ট। কিন্তু ঠিকমতো মাথায় বল লাগাতে পারেননি। ফলে বল গোলের বাইরে বেরিয়ে যায়। আর স্টুয়ার্ট হতাশায় গোলের জাল জড়িয়ে ধরেন।

৬৬ মিনিটের মাথায় আবার সুযোগ পায় মোহনবাগান। নিজেদের বক্সের মধ্যে মনবীর সিংকে ফেলে দেন বেঙ্গালুরুর ডিফেন্ডার। পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোনো ভুল করেননি পেত্রাতোস। বাগান যাতে ম্যাচে সমতা ফেরাতে না পারে তার জন্য ডিফেন্সে লোক বাড়ায় বেঙ্গালুরু। কিন্তু তাদের এই চাল ঠিক টিকল না। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে সমতা ফেরালেন অনিরুধ থাপা। কর্নার পায় মোহনবাগান। কর্নার শট পৌঁছে যায় বেঙ্গালুরুর বক্সে। তাদের ডিফেন্ডার বল বক্সের বাইরে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তা পেয়ে যান থাপা। তাঁর ডান পায়ের জোরালো শট ফুটবলারদের জঙ্গল ভেদ করে বেঙ্গালুরুর জালে জড়িয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ে ২-২ ফল হওয়ায় ম্যাচ পৌঁছে যায় টাইব্রেকারে।

আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে মোহনবাগান সমর্থকদের টিফো প্রদর্শন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

ফয়সালা পেনাল্টি শুট-আউটে

প্রথমে মোহনবাগানকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন জেসন কামিংস। গুরপ্রীত ভুল দিকে ঝাঁপান। বেঙ্গালুরুর মেনডেজও গোল করেন। ফল ১-১।

এরপর গুরপ্রীত ঠিক দিকে ঝাঁপানো সত্ত্বেও গোল করেন মোহনবাগানের মনবীর সিং এবং ঠিক সেভাবেই গোল করেন বেঙ্গালুরুর ভেকে। ফল ২-২।

তৃতীয় শুট-আউট। মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন কোলাসো। বেঙ্গালুরুর হয়ে গোল করেন পেদ্রো কাপো। ফল ৩-৩।

চতুর্থ শুট-আউট। মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন পেত্রাতোস। কিন্তু বেঙ্গালুরুর নার্জারির শট বাঁচিয়ে দেন বিশাল। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ৪-৩ গোলে।

পঞ্চম পেনাল্টি কিক মোহনবাগানের হয়ে নেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট। বাঁচিয়ে দেন গুরপ্রীত। কিন্তু বেঙ্গালুরুর জোভানোভিচের শট মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল বাঁচিয়ে দিয়ে দলকে জয়ী করে দেন ৪-৩ গোলে। আবার ম্যাচের নায়ক হয়ে গেলেন বিশাল কাইথ।

আরও পড়ুন

ডুরান্ড কাপ ২০২৪: টাইব্রেকারে বিশালের হাত ধরে পঞ্জাবকে হারিয়ে সেমিফাইনালে মোহনবাগান

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version