Home খেলাধুলো ফুটবল এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টু: সুযোগ নষ্টের খেসারত দিল মোহনবাগান, পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল...

এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টু: সুযোগ নষ্টের খেসারত দিল মোহনবাগান, পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল রবশান

0
জেসন কামিংসকে আটকানোর চেষ্টা। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট: ০ এফসি রবশান: ০

কলকাতা: প্রথমার্ধে এফসি রবশানের দাপট সামান্য হলেও বেশি ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। আর তারই খেসারত দিল তারা। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-এর প্রথম ম্যাচে তাজিকিস্তানের ফুটবল ক্লাবকে হারানোর সুযোগ নষ্ট করল সবুজ-মেরুন। বুধবার সন্ধ্যায় সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচ শেষ হল গোলশূন্য অবস্থায়।

এএফসি-র প্রতিযোগিতার নিয়মানুসারে বিদেশি ফুটবলার প্রথম একাদশে রাখার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই অর্থাৎ যত খুশি বিদেশি খেলানো যায়। কিন্তু মোহনবাগানের কোচ হোসে মলিনা রেখেছিলেন মাত্র তিনজনকে। রক্ষণে টম অলড্রেডের সঙ্গে আক্রমণে জেসন কামিংস এবং দিমিত্রি পেত্রাতোস। গ্রেগ স্টুয়ার্ট ছিলেন পরিবর্ত।

হোসে মোলিনা কোচ হয়ে আসার পর থেকে মোহনবাগানের ভাগ্য ভালো যাচ্ছে না। এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হল না। তাজিক দলে যেসব বিদেশি খেললেন তাঁদের পরিচয় দেওয়ার মতো তেমন কিছু নেই। কিন্তু মোহনবাগানে আছেন দুজন বিশ্বকাপার। সেই তাজিক দলের কাছে ঘরের মাঠে আটকে গেল মোহনবাগান। তাই খেলা শেষে গ্যালারি থেকে ওঠা ‘মোলিনা গো ব্যাক’ স্লোগানে আশ্চর্যের কিছু থাকল না।

MB Stewart 19.09

গোল করার চেষ্টায় এগিয়ে চলেছেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

প্রথমার্ধে আক্রমণ বেশি রবশানের

প্রথমার্ধে খেলা হয় প্রায় সমানে সমানে। তবে তারই মধ্যে রবশানের দাপট কিছু বেশি ছিল। ম্যাচের গোড়া থেকেই তারা আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বল ঘোরাফেরা করছিল মোহনবাগানের বক্সে। তবে তা থেকে গোল হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি  হয়নি। ১৪ মিনিটের মাথায় প্রথম আক্রমণে উঠে আসে মোহনবাগান। আশিস রাইয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে মনবীর সিংহ ভালোই এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রবশানের সামুয়েল ওফোরি তাঁকে আটকে দেন।

ছোটো ছোটো পাসে খেলে ১৯ মিনিটের মাথায় রবশানের গোলের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল মোহনবাগান। মনবীরের কাছ থেকে বল পেয়ে গিয়েছিলেন পেত্রাতোস। তিনি প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তাঁদের বক্সে পৌঁছে যান। কিন্তু রবশানের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা তাঁকে ঘিরে ফেলায় পেত্রাতোসের শট আটকে গেল।

ম্যাচের ২১ মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। রেফারির বদান্যতায় বেঁচে গেল তারা। মারাত্মক ফাউল করেছিলেন দীপেন্দু বিশ্বাস। ডানদিক থেকে উঠে আসা আন্দ্রি মার্কোভিচকে জোড়া পায়ে ট্যাকল করেন দীপেন্দু। রেফারি হলুদ কার্ড দেখিয়ে তাঁকে সতর্ক করেন। তবে রেফারি লাল কার্ড দেখালেও আশ্চর্যের কিছু ছিল না। ৫ মিনিট পরেই আবার গোলের সুযোগ পায় রবশান। দীপেন্দুর ভুলে মোহনবাগানের বক্সের কাছাকাছি ফ্রিকিক পায় রবশান। খোলমুরদ নাজারভের ফ্রিকিক অল্পের জন্য গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটেই কোজো মাতিচের কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শট করেন রবশানের অধিনায়ক মহম্মদজান রহিমভ। কিন্তু গোলকিপার বিশাল কাইথের হাত যথারীতি বাঁচিয়ে দেয় মোহনবাগানকে।

গোল খাওয়া থেকে বেঁচে গেলেন তাজিক গোলকিপার হৃৎসেঙ্কো। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক সুযোগ নষ্ট

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও রবশান বেশি দাপট দেখাচ্ছিল। মোহনবাগানের অর্ধে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল তারা, কিন্তু তাদের রক্ষণকে কিছুতেই ভেদ করতে পারছিল না তাজিক দলটি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৬৪ মিনিটে খেলোয়াড় পালটে মোহনবাগানের খেলায় কিছুটা ঝাঁঝ আনলেন মোলিনা। নামালেন লিস্টন কোলাসো এবং লালেংমাপুইয়া রালতে তথা আপুইয়াকে।

ম্যাচের ৭৬ মিনিটে গোল করার সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন মোহনবাগানের জেসন কামিংস। রবশানের রক্ষণের ভুলে আপুইয়ার বাড়ানো বল পেয়ে যান কামিংস। বল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। ওফোরি ধাওয়া করেন তাঁকে, তবে সুবিধা করতে পারেননি। কামিংসের সামনে তখন শুধু বিপক্ষ গোলকিপার। এমন সুবর্ণ সুযোগ হেলায় নষ্ট করলেন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপার। গোলকিপার ইয়েভেন হৃৎসেঙ্কোর মাথায় উপর দিয়ে লব করে বল পাঠিয়ে দিতে পারতেন বিপক্ষের গোলে। তা না করে কামিংস এমন একটা শট নিলেন যা ধরতে কোনো বেগ পেতেই হল না হৃৎসেঙ্কোকে।

কী ভাবছেন মোলিনা? ছবি: সঞ্জয় হাজরা।

ম্যাচের শেষ কয়েক মিনিট বাকি থাকতে একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে মোহনবাগান। ৮৬ মিনিটে একটি ব্যাকপাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন হৃৎসেঙ্কো। পেত্রাতোস কাছেই ছিলেন। কিন্তু বলের কাছে পৌঁছনোর আগেই তা ক্লিয়ার করে দেন ওফোরি। পরের মিনিটে আবার গোল করার ভালো সুযোগ। গ্রেগ স্টুয়ার্টের থেকে বল পেয়ে গেছিলেন লিস্টন কোলাসো। বাঁদিক দিয়ে বল নিয়ে গিয়ে বক্সে ঢুকে সামনে একা পেয়ে যান গোলকিপারকে। কিন্তু তাঁর শট গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

৮৮ মিনিটে গ্রেগ স্টুয়ার্টের কাছ থেকে পাস পেয়ে রবশানের গোলে তা ঢুকিয়ে দেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। কিন্তু তিনি অফসাইডে থাকার জন্য গোল বাতিল হয়। ম্যাচের ৯০ মিনিটে মোহনবাগানের পেনাল্টির দাবি নাকচ করেন রেফারি। বক্সের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল পেত্রাতোসকে। তবে রিপ্লে-তে দেখা যায় রেফারির সিদ্ধান্ত যথাযথ। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়েও গোল করার সুযোগ পেয়েছিল মোহনবাগান। তবে কাজের কাজ কিছু হয়নি।

আরও পড়ুন

এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ২: আজ তাজিকিস্তানের এফসি রবশানের মুখোমুখি হচ্ছে মোহনবাগান

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version