‘জটিল এবং শক্তিশালী’ হামলার পরিকল্পনা ইরানের। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে খামেনেইয়ের কঠিন প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি
ইরান শীঘ্রই ইজরায়েলের উপর শক্তিশালী প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেখানে আরও শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র এবং বিভিন্ন আক্রমণাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খোমেইনি ইজরায়েলের সাম্প্রতিক আক্রমণের পর এই প্রতিশোধের সংকল্প ঘোষণা করেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের (WSJ) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইরান এবং আরব কর্মকর্তাদের মতে, ইরান এই আক্রমণ সীমিত অস্ত্রে সীমাবদ্ধ রাখবে না বরং আরও শক্তিশালী এবং বহুমুখী অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। ইরানের ইসলামী রেভেলিউশনারি গার্ড বাহিনী (IRGC) নিশ্চিত করেছে যে তারা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন আক্রমণ চালাবে। IRGC-এর ডেপুটি কমান্ডার আলি ফাদাভি ইরানের সংবাদ সংস্থা INSA-কে বলেছেন যে, এই আক্রমণের নাম ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ হতে পারে, যা এর আগে এপ্রিল এবং অক্টোবর মাসে ইজরায়েলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারে।
ইরান-মিত্রদের প্রতিক্রিয়া
শনিবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খোমেইনি বলেন, তেহরান এবং তার মিত্ররা ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিশোধ’ নেবে। এই হুঁশিয়ারির পেছনে রয়েছে ইজরায়েলের ২৬ অক্টোবরের সামরিক আক্রমণ। ওই আক্রমণে ১০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী ইরানের উপর হামলা চালায়, যেখানে পাঁচ জন নিহত হয়, যার মধ্যে একজন সাধারণ নাগরিকও ছিলেন।
ইজরায়েল ও সিরিয়ায় সামরিক কার্যক্রম
ইজরায়েল জানিয়েছে যে, সিরিয়ায় এক সাম্প্রতিক অভিযানে তারা এক ইরানি ‘সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক অপারেটিভ’ আটক করেছে। ইজরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সেসের (IDF) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলি সোলেমান আল-আসসি নামে একজন সিরিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যিনি সীমান্ত এলাকার আইডিএফ সেনাদের উপর নজরদারি চালাচ্ছিলেন এবং ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবাড়ি কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তথ্য সংগ্রহ করছিলেন।
ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু লেবানন সীমান্ত পরিদর্শন করেন এবং বলেন, তাঁর লক্ষ্য হলো হিজবুল্লাকে পুনরায় অস্ত্রসজ্জিত হওয়া থেকে বিরত রাখা এবং সিরিয়া হয়ে লেবাননে অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ করা। ইজরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই লেবাননে হিজবুল্লার কার্যকলাপ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে।
হিজবুল্লা এবং ইজরায়েলি সংঘাত
লেবাননের হিজবুল্লা গোষ্ঠী, যা ইরানের সমর্থিত, ইজরায়েলি সীমান্ত এলাকায় একাধিক হামলা চালিয়েছে। রবিবার তারা ইজরায়েলের উত্তর উপকূলের শহর হাইফায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানায়। হিজবুল্লার বিবৃতিতে জানানো হয়, এটি ছিল “ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর প্রযুক্তিগত ঘাঁটির উপর প্রথম হামলা।” এর আগে হিজবুল্লা আরও একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন আক্রমণের দায় স্বীকার করে।
ইজরায়েল এবং হিজবুল্লার মধ্যে চলমান সংঘর্ষে গত এক বছরে লেবাননে ২,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আর হিজবুল্লার গোলাবর্ষণে ইজরায়েলে নিহতের সংখ্যা ৬৯।