২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার চূড়ান্ত শুনানি এগিয়ে আসছে, আর সেই সঙ্গে জটিল হয়ে উঠছে যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথকীকরণের প্রশ্ন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার এজলাসে মামলার শুনানি হয়। এদিন মামলাকারীদের বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য শুনে বিস্তারিত আলোচনা করেন প্রধান বিচারপতি।
মামলাকারীদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রস্তাব দেন, নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হোক, যাতে প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হতে পারেন। তাঁর দাবি, ২০১৬ সালের পরীক্ষায় যারা বসেছিলেন, তাঁদের আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া উচিত, এমনকি যদি বয়সসীমা অতিক্রান্ত হয়, তবুও। তাঁর মতে, যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক করা এখন প্রায় অসম্ভব।
কিন্তু, যাঁরা নিজেদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে দাবি করছেন, তাঁরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা চাকরি করছেন, আর সরকারের ব্যর্থতার কারণে নতুন করে তাঁদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা অন্যায্য ও অমানবিক।
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম আদালতে বলেন, “প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চারবার কাউন্সেলিং হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে, নম্বর বিভাজন ছাড়াই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মামলাকারীদের তরফে এসএসসি-র বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকা জরিমানার দাবি জানানো হয়।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন রাজ্য সরকার ও এসএসসি-র বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি চূড়ান্ত রায় দেবেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ওপর নির্ভর করছে ২৬ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় দিয়েছিল এবং ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বাতিল ঘোষণা করেছিল। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি পাওয়া প্রার্থী চাকরি হারান। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়ে, যার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির দিকেই এখন নজর সকলের।