Homeইতিহাসআজকের দিনে ঠিক ৮৪ বছর আগে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ কী করেছিলেন

আজকের দিনে ঠিক ৮৪ বছর আগে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ কী করেছিলেন

প্রকাশিত

খবরঅনলাইন ডেস্ক: ভাবনাটা প্রথম আসে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মাথায়। এই কলকাতা শহরে একটা বড়ো প্রেক্ষাগৃহ চাই। এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১৯৩৭ সালের মে মাসের একদিন নেতাজি তাঁদের এলগিন রোডের বাড়িতে একটা সভা ডাকলেন। সেই সভায় আরও অনেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নেতাজির বন্ধু অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রচন্দ্র মিত্রও।

ওই সভাতেই নেতাজি তাঁর ইচ্ছার কথা বলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস যাতে নাগরিকদের বড়ো সভা আয়োজন করতে পারে তার উপযুক্ত প্রেক্ষাগৃহ কলকাতা শহরে নেই। একটা উপযুক্ত প্রেক্ষাগৃহ চাই।

এ ব্যাপারে নেতাজি নিজেই উদ্যোগী হন। মধ্য কলকাতায় সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ (বর্তমানে চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ) এবং হ্যারিসন রোডের (অধুনা মহাত্মা গান্ধী রোড) মোড়ের কাছে কলকাতা পুরসভার ৩৮ কাঠার জমির খোঁজ পান নেতাজি। ওই জমিতে প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করার জন্য পুরসভার কাছে আবেদন করেন নেতাজি। পুরসভা তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই জমি ১ টাকা লিজে নেতাজিকে দিয়ে দেয়।

প্রস্তাবিত প্রেক্ষাগৃহের নামকরণ করার জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে দরবার করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। রবীন্দ্রনাথ নাম দিলেন ‘মহাজাতি সদন’। শান্তিনিকেতনের বিশিষ্ট স্থপতি সুরেন্দ্রনাথ কর মহাশয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রেক্ষাগৃহের নকশা রচনা করার জন্য।

প্রেক্ষাগৃহের শিলান্যাস করার জন্য রবীন্দ্রনাথকেই অনুরোধ করেছিলেন নেতাজি। দিনটা ছিল ১৯ আগস্ট, ১৯৩৯। আজ থেকে ঠিক ৮৪ বছর আগে ঠিক এই দিনটাতেই ‘মহাজাতি সদন’-এর শিলান্যাস হয়েছিল।       

বিশ্বকবি প্রেক্ষাগৃহের শিলান্যাস করে বলেছিলেন, “আজ এই মহাজাতি সদনে আমরা বাঙালী জাতির যে শক্তি প্রতিষ্ঠা করবার সংকল্প করেছি তা সেই রাষ্ট্রশক্তি নয়, যে শক্তি শত্রুমিত্র সকলের প্রতি সংশয় কণ্টকিত। জাগ্রত চিত্তকে আহ্বান করি; যার সংস্কারমুক্ত উদার আতিথ্যে মনুষ্যত্বের সর্বাঙ্গীণ মুক্তি অকৃত্রিম সত্যতা লাভ করি। বীর্য এবং সৌন্দর্য, কর্মসিদ্ধিমতী সাধনা এবং সৃষ্টিশক্তিমতী কল্পনা, জ্ঞানের তপস্যা এবং জনসেবার আত্মনিবেদন, এখানে নিয়ে আসুক আপন আপন বিচিত্র দান।”

mahajati2
মহাজাতি সদনের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মঞ্চে বসে রয়েছেন নেতাজি। ছবি পর্যটন বিভাগের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত

১৯৪১ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র দেশ ছেড়ে চলে গেলে ‘মহাজাতি সদন’ নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিটিশ সরকার ‘মহাজাতি সদন’-এর জমির লিজ বাতিল করে দেয়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যান নেতাজির দাদা শরৎচন্দ্র বসু ও নৃপেন্দ্রচন্দ্র মিত্র। আদালতের রায়ে লিজ বাতিল বেআইনি ঘোষিত হয়। তবে ‘মহাজাতি সদন’ নির্মাণের কাজ শুরু হতে হতে ১৯৪৭ গড়িয়ে যায়।

১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মহাজাতি সদন বিল পাস হয়। এর পর রাজ্যের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে ফের নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত মহাজাতি সদনের দ্বারোদ্ঘাটনের জন্য এই ১৯ আগস্ট দিনটিই বেচ্ছে নেওয়া হয়।

১৯৫৮-এর ১৯ আগস্ট মহাজাতি সদনের দরজা খুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় বলেছিলেন, “এই গৃহ হোক সমগ্র জনসমাজের সকল শুভকর্মের প্রাণকেন্দ্র। তাঁরা যেন এখানে ভারতের মনুষ্যত্ব এবং জাতীয়তার সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের জন্য জ্ঞান ও আলোক খুঁজে পান। তাহলেই এর মহাজাতি সদন নাম হবে সার্থক।”        

সাম্প্রতিকতম

তেলঙ্গনায় মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে রেবন্ত রেড্ডি, শপথ কবে

হায়দরাবাদ: তেলঙ্গনার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন রেবন্ত রেড্ডি। কার্যত তাঁর নেতৃত্বেই বিআরএস দুর্গে ফাটল...

শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে মিগজাউম, পশ্চিমবঙ্গেও দুর্যোগের পূর্বাভাস

কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের সরাসরি প্রভাব পড়বে না পশ্চিমবঙ্গে। তবে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায়...

মধ্যপ্রদেশ বিজেপির হাতেই, পদ্ম ফুটল রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়েও! তেলঙ্গনায় মুখরক্ষা কংগ্রেসের

মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান ও তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা রবিবার। সকাল ৮টার সময় শুরু হয়...

টি২০ সিরিজ: অক্ষরের বোলিং আর রিঙ্কুর ব্যাটিং-এ ভর করে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ দখল ভারতের  

ভারত: ১৭৪-৯ (রিঙ্কু সিং ৪৬, যশস্বী জয়সোয়াল ৩৭, বেন ডোয়ারসুইশ ৩-৪০, তনবীর সংঘ ২-৩০) অস্ট্রেলিয়া:...

আরও পড়ুন

সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার করে মুন্না, ফিরোজরা মনে করিয়ে দিলেন জন হেনরিকে – ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ওই…’

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায় ‘মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না,...

স্মরণ করি ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান গেয়ে যাওয়া শহিদ প্রদ্যোত ভট্টাচার্যকে

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায় জন্ম তাঁর ১৩ নভেম্বর (মতান্তরে ৩ নভেম্বর), ১৯১৩। বয়স তখন তাঁর ১৮ পেরিয়ে...

‘মহালয়া’ মানেই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’, মনে পড়ে যায় তার তিন স্রষ্টাকে

শম্ভু সেন রাত পোহাতেই এল শিউলি-ফোটা শরতের সেই ভোর। বেজে উঠল সেই সুর, যে সুরের...