অজন্তা চৌধুরী
তসলিমা নাসরিন এবং রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর প্রেম যেন বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত রোমান্টিক উপাখ্যান। ১৯৮২ সালে তসলিমা নাসরিন রুদ্রকে ভালোবেসে বিয়ে করেন এবং তার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। ১৯৮৬ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তাদের সম্পর্ক এবং বিচ্ছেদ বিভিন্ন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে এই অসীম প্রতিভাবান কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যু হয়। তসলিমা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
এ হেন তসলিমা নাসরিন এবং রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার আশ্রয়ে দেবাশিস দত্তর পরিচালনায় ইফটা-র সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘রুদ্রকে লেখা চিঠি’। সম্প্রতি থিয়েঅ্যাপেক্সে মঞ্চস্থ হয়ে গেল নাটকটি। দুই কবির প্রেম-অপ্রেম, মিলন-বিচ্ছেদ, ক্ষয় বা ভাঙনের একান্ত ব্যক্তিগত যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুহূর্তগুলো এই নাটকে উঠে আসে। যা একসময় শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিগত থাকলেও তাদের সম্পর্কের আয়নায় যেন আমরা নিজেদের দেখতে পাই।

চারিদিকে সম্পর্কের ভাঙনের যুগে ইফটা-র এই নাট্য চিরন্তন ভালবাসার কথা মনে করায়। আসলে এ নাটক যেন মঞ্চে লেখা একটি কবিতা। মঞ্চের সামান্য কিছু উপকরণ এবং একটি ফাঁকা ফ্রেম গভীর নান্দনিক অভিঘাত তৈরি করে দর্শকমনে।
রুদ্র চরিত্রে দেবাশিস দত্তর গভীর মননশীল অভিনয় এবং তসলিমার চরিত্রে দেবযানী মুখার্জির স্বতস্ফূর্ত অভিনয় ও গান এক ঝলক তাজা বাতাসের মতো। আলোয় প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য, আবহে কৃশানু ব্যানার্জি, প্রজেকশনে শুচিস্মিতা রায়ের কাজ বিশেষ প্রসংশার দাবি রাখে। প্রযোজনা নিয়ন্ত্রণে ছিলেন সুরিন্দর সিং।