অজন্তা চৌধুরী
প্রতি বছরের মতো এ বারেও কোচবিহারের সুরমালঞ্চ মিউজিক কলেজ পালন করল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবস। কবির ১৬৩তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে কলেজের ক্লাসঘরে অনাড়ম্বর ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত হয়েছিল এক অনুষ্ঠান। ফুলের মালায় কবির ফটো সাজানো হয়। জ্বালানো হয় প্রদীপ-ধূপ। অনুষ্ঠান শুরু হয় ছোটোদের সমবেত কন্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটির মধ্য দিয়ে।
প্রতিষ্ঠানের সুপারিন্টেন্ডেন্ট তথা সংগীতশিক্ষিকা সুদেষ্ণা চৌধুরী, প্রিন্সিপাল তথা তবলাশিক্ষক অমলেশ চৌধুরী, গিটারশিক্ষক অজয় পাল, আবৃত্তিশিক্ষক অসীম কুণ্ডু, নৃত্যশিক্ষিকা অঙ্কিতা মুখোপাধ্যায় ও ঋতুপর্ণা চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে কচিকাঁচাদের কবিপ্রণামে এ দিনের সকালটি আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। অবশ্য এখানকার গিটার শিক্ষার্থীরা কেউই অল্পবয়সি নন।
অদৃজা কুণ্ডুর ‘আর নাই যে দেরী’, ঋতুশ্রী মণ্ডলের ‘খরবায়ু বয় বেগে’, রাজর্ষি বর্মণের ‘প্রভু আমার, প্রিয় আমার’ এবং বড়োদের সমবেত কন্ঠে পরিবেশনা ‘হে নূতন’ শ্রোতা-দর্শকের মন কেড়ে নেয়।
ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের একক ও সমবেত নাচের ছন্দ ছিল বেশ নয়নাভিরাম। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ’, ‘নীল দিগন্তে ওই’, ‘সজনী সজনী রাধিকা লো’, ‘সুন্দরী রাধে’, ‘আমরা নূতন যৌবনেরই দূত’ ইত্যাদি গানের পরিবেশনা বেশ ভালো লাগে সকলের। অভিভাবিকাদের সমবেত প্রয়াস ‘প্রেমের জোয়ারে’ নৃত্যটি ছিল বেশ অভিনব।
আবৃত্তি করে নাইমা পারভিন (‘হাট’), দেবায়ন দত্ত (‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ ও ‘একদিন রাতে আমি’) এবং সহজ পাঠ থেকে ছোট্ট সমদর্শী চৌধুরী ‘আলো হয়, গেল ভয়’। সকলেরই পরিবেশনা বেশ সুন্দর ছিল। অবশ্যই ভালো লাগে সম্মেলক আবৃত্তি ‘এক গাঁয়ে’।
গিটারে মিনতি পাল ‘হে নূতন’, নিবেদিতা গোস্বামী ‘গোপন কথাটি’, অরূপা সাহা ‘আগুনের পরশমণি’ এবং শুভা চৌধুরী ‘আজি প্রণমি তোমারে’ ও ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ বাজিয়ে সকলের মন ভরিয়ে দেন।
প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীই যোগ দেওয়ায় অনুষ্ঠান দীর্ঘায়িত হয় বটে, তবে কেউই কিন্তু ধৈর্য্য হারাননি। সকলেই মন দিয়ে উপভোগ করেছেন সুর-তাল-ছন্দে মোড়া সমগ্র অনুষ্ঠানটি। পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই এই প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে আরও মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান উপহার দেবে, কোচবিহারবাসীরা এ আশা করতেই পারেন।
আরও পড়ুন
রক্তঝরা ১৯ মে, বাংলা ভাষার মর্যাদার দাবিতে প্রাণ দিয়েছিলেন কমলারা