বাড়ির বড়োরা আমাদের পরামর্শ দেন, খাওয়াদাওয়া করার পরই ভরাপেটে যেন বেশি দৌড়ঝাঁপ বা কায়িক পরিশ্রম না করি। কিন্তু সাম্প্রতিক নানান গবেষণায় দেখা গেছে, রোজ খাওয়ার পর কমপক্ষে ১০০ পা হাঁটলেই পেশি সচল হয়। হজমশক্তি বাড়ে। খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়। পেট ফোলা কমে। খাওয়ার পর বসে পড়লে বরং হজম করতে অসুবিধা হয়। শরীরে অস্বস্তি হয়।
এ ছাড়াও খাবার খাওয়ার পরই রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। হাঁটলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ইনসুলিন সেনসেটিভিটি ঠিক থাকে। তাই খাওয়ার পর হাঁটা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই জরুরি। হালকা চালে খাওয়ার পর হাঁটাচলা করলে মেটাবলিক রেট বা বিপাকক্রিয়া বাড়ে। ক্যালোরি ক্ষয় হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। খাইখাই ভাব কমে। মিষ্টি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। হাঁটলে এন্ডোর্ফিন হরমোনের নিঃসরণ হয়। মুড বা মেজাজ ভালো থাকে।
খাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিট সময় হাতে রাখুন হাঁটার জন্য। খুব জোরে হাঁটবেন না। ধীরে হাঁটুন। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে। ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্সের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। কিন্তু নিয়মিত যদি ৪ হাজার পা হাঁটা যায় তা হলে এন্ডোর্ফিন হরমোনের মতো ফিলগুড হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। মন মেজাজ ভালো থাকে। মানসিক উদ্বেগ কাটিয়ে ওঠা যায়। এ ছাড়াও হাঁটলে মনঃসংযোগ বাড়ে। হাঁটলে ডোপামিন ও সেরোটোনিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। শৈল্পিক চিন্তাভাবনা বাড়ে।
এ ছাড়াও ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিনের গবেষণায় দেখা গেছে, কমপক্ষে ১১ মিনিট হাঁটলেই অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা কমে ২৫%। সপ্তাহে ৭৫ মিনিট হালকা শারীরিক কসরত করলেই অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা কমে ২৩%। হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে ১৭% আর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে ৭%। সপ্তাহে ৫ দিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটলেই করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে ১৯%। এ ছাড়াও হাঁটা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আর রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। সামাজিকতা বাড়িয়ে তোলে।
আরও পড়ুন
সব সময় উদ্বেগে রয়েছেন পরিবারের বয়স্করা, জানেন কি কী রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তাঁরা