মোগলসম্রাট আকবরের হাত ধরে আভিজাত্যের প্রতীক হিসাবে এই ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন ঘটে কার্পেটের। বহু যুগ পেরিয়ে মোগল দরবার ছেড়ে সেই কার্পেট এখন আমআদমির দরবারে শোভা বাড়াচ্ছে।
অন্দরসজ্জার জন্য কার্পেট কিনলেই তো হল না, যত্নেও রাখতে হবে তাকে। রোজকার ধুলো, বালি, নোংরা জমে কার্পেট অপরিষ্কার হয়। কারও যদি শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, হাঁচি-কাশির সমস্যা থাকে তা হলে কার্পেটের ধুলোয় সমস্যা বাড়তে পারে।
★কার্পেটের ধুলো জমা এড়াতে নিয়মিত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করুন। মাসে একবার ধুলো ঝেড়ে রোদে দিন।
★কার্পেট যাতে ভিজে না যায়, আগুন না ধরে যায়, সে দিকে খেয়াল রাখুন।
★ড্যাম ধরা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় কার্পেট রাখবেন না। এতে সহজে কার্পেট নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
★পোকামাকড়, পিঁপড়ের হাত থেকে কার্পেট বাঁচাতে নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করুন।
বাড়িতে কীভাবে সহজে পরিষ্কার করবেন কার্পেট
ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য অনেকেই বসার ঘরে পেতে রাখেন সুদৃশ্য কার্পেট। কিন্তু বাড়িতে যদি ছোটো শিশু বা পোষ্য থাকে তা হলে কার্পেট রাখা সত্যিই হ্যাপার।
১) স্টিম ক্লিনার ছাড়া কীভাবে বাড়িতে সহজে পরিষ্কার করবেন কার্পেট? কার্পেট পরিষ্কার করার জন্য লাগবে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার। সঙ্গে লাগবে বেকিং সোডা আর বাসন মাজার সাবান, পুরোনো টুথব্রাশ, ব্রাশ, পরিষ্কার রাগ বা তোয়ালে আর এক বালতি গরম জল। কার্পেটের যে জায়গায় দাগ লেগেছে সেখানের ধুলোবালি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করে পরিষ্কার করুন। দাগ লাগা জায়গার ওপর বেকিং সোডা লাগিয়ে রাখুন। বাসন পরিষ্কার করার লিকুইড সাবান ব্যবহার করলে ৬-৮ ইঞ্চি দাগপিছু ১ টেবিলচামচ সাবান ব্যবহার করুন। বেশ কিছুক্ষণ দাগের ওপর সাবান লাগিয়ে রাখুন। তার পর পুরোনো ব্রাশ, টুথব্রাশ, রাগ বা তোয়ালে আর গরম জল দিয়ে দাগের জায়গাটা ঘষুন। গোটা মেঝে জলে ভেজাবেন না।

২) এক বালতি জলে কিছুটা কাপড় কাচার গুঁড়ো সাবান মেশান। কিছুটা খাবারে ব্যবহার করার নুন ও সামান্য বেকিং সোডা ব্যবহার করুন। শক্ত ব্রাশ বা রবার ব্যবহার করুন। একটা স্প্রে বোতল ব্যবহার করুন। পুরোনো কাপড়চোপড় বিশেষ করে টেরিক্লথের তোয়ালে হলে ভালো হয়। সামান্য পরিমাণে গুঁড়ো সাবান জলের মধ্যে মেশান৷ স্প্রে বোতলে ভরুন মিশ্রণটি। বেশি নাড়াবেন না, ভালো করে মিশতে দিন। কার্পেটের যে জায়গাটা পরিষ্কার করবেন সেই জায়গায় বেকিং সোডা আর নুন ছড়িয়ে দিন। সাবানগোলা জলটা জায়গাটায় স্প্রে করে অল্প কিছুক্ষণ রাখুন। ব্রাশ ঘষুন ভালো ভাবে কার্পেটের ওপর। অনেক ময়লা, ধুলোবালি উঠে আসবে। তোয়ালে চেপে চেপে কার্পেটের ওপর জল শুষে নিন। দাগ লাগার জায়গা শুকনো হয়ে গেলে স্প্রে বোতলে সাবান জল ফেলে দিয়ে পরিষ্কার জল ভরুন। হালকা করে কার্পেটের দাগ লাগা ওই জায়গায় স্প্রে করুন। তোয়ালে চেপে রাখুন জায়গাটার ওপরে। কিছুক্ষণ এমন ভাবেই রেখে দিন। দাগ পরিষ্কার হয়ে যাবে।
৩) অনেকের রাসায়নিকের গন্ধ সহ্য হয় না। সে ক্ষেত্রে এক বালতি গরম জলের এক চতুর্থাংশের মধ্যে বাসন পরিষ্কার করার এক টেবিল-চামচ লিকুইড সাবানের সঙ্গে এক টেবিল-চামচের এক চতুর্থাংশ হোয়াইট ভিনিগার মেশান। দাগ লাগা জায়গার ওপর লাগান।
৪) কার্পেটে রক্ত, ওয়াইন বা বিয়ারের দাগ লাগলে সহজে উঠতে চায় না। সে ক্ষেত্রে দাগের ওপর ক্লাব সোডা লাগান। শুকনো কাপড় বা কাগজ দিয়ে দাগের ওপর চেপে ধরুন। দাগ উঠে যাবে। অনেক সময় শুকনো কাপড়ে কিছুটা করে ক্লাব সোডা দাগের ওপর লাগালেও দাগ সম্পূর্ণ ভাবে মিলিয়ে যায় না। স্প্রে বোতলে এক ভাগ হোয়াইট ভিনিগার আর এক ভাগ জল দিয়ে মেশান। দাগের জায়গাটার ওপর স্প্রে করুন। ১০-১৫ মিনিট শুষে নিতে দিন। শুকনো স্পঞ্জ দাগের ওপর চেপে ধরুন। যতক্ষণ না দাগ মিলিয়ে যায় এই প্রক্রিয়া করতে থাকুন।
৫) দাগ লাগা জায়গার ওপর কিছুটা গুঁড়ো শুকনো বরফ ছড়িয়ে দিন। আধ ঘণ্টা এমন ভাবে রেখে দিন। ঝাঁটার ডগা দিয়ে জোরে জোরে মারতে থাকুন। কার্পেটের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ময়লাও বরফে জমাট বেঁধে যাবে। খোলা আকাশে সূর্যের আলোয় রেখে দিন বরফ বাষ্প হয়ে যাবে।
৬) সাধারণ দাড়ি কাটার শেভিং ক্রিম কার্পেটের দাগ লাগা জায়গার ওপর লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। তার পর শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।