গ্যালুপ সমীক্ষার (Gallup survey) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন একাকিত্বের শিকার। একাকিত্বের কারণে মানসিক কষ্টের পাশাপাশি পাচ্ছেন শারীরিক যন্ত্রণা। উদ্বেগ, দুঃখ, রাগে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হচ্ছেন তাঁরা।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, একদিনে ১৫টি সিগারেট খেতে যতটা ক্ষতি হয় একাকিত্বও ঠিক ততটাই ক্ষতি করে শরীর ও মনের। মানসিক উদ্বেগ ও অবসাদের কারণ হল একাকিত্ব। একাকিত্ব ৩০% হার্টের অসুখ, ৫০% ডিমেনশিয়া ও ৬০% অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। সোশ্যাল ফিজিওলজিক্যাল অ্যান্ড পার্সোনালিটি সায়েন্স-এর (Social Psychological and Personality Science) গবেষণায় দেখা গেছে, গঠনমূলক সামাজিকতা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও একাকিত্ব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়ার ওপর তিন বছর ধরে একটানা গবেষণা চালান। প্রধান গবেষক মাহনাজ রোশানেই জানান, “আমরা আমাদের গবেষণায় দেখেছি কারও সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে একটানা গঠনমূলক কথাবার্তা বললে, সামাজিকতা পালন করলে তা গড়ে একজন ব্যক্তির শরীর ও মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।”
ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগাযোগের থেকে সরাসরি সামনাসামনি কথাবার্তা বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সামাজিকতা আত্মা, মন ও শরীরের পক্ষে দারুণ উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গী বা সঙ্গিনী, পরিজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, সহকর্মীদের সঙ্গে সুস্থ সম্পর্ক থাকলে আপনি অনেক বেশি শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভালো থাকবেন। অনেক বছর সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারবেন।
সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করা কেন জরুরি
১) সামাজিক একাকিত্ব, মানসিক উদ্বেগ ও অবসাদ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। উদ্বেগ কাটিয়ে মন, মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে। জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
২) অনেক ক্রনিক রোগের কারণ হল একাকিত্ব ও মানসিক উদ্বেগ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় মানসিক উদ্বেগের কারণে। সামাজিকতা হার্ট ভালো রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৩) সামাজিকতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্করা সামাজিক ভাবে সক্রিয় থাকলে, মেলামেশা করতে থাকলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে। সামাজিকতা ১২% ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
৪) সামাজিকতা জীবনযাত্রার ওপরও প্রভাব ফেলে। অন্যদের দেখে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। বদভ্যাস দূর হয়। অনেক বছর সুস্থ ভাবে বাঁচা যায়।
৫) সামাজিকতা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। সহমর্মিতা বোধ জাগিয়ে তুলতে পারে। নতুন জিনিস শিখতে সাহায্য করে। মনঃসংযোগ বাড়ায়।
আরও পড়ুন
আপনার জীবনে টক্সিক বা বিষাক্ত মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন, কীভাবে চিনবেন তাদের